Quantcast
Channel: Eisamay
Viewing all 41318 articles
Browse latest View live

পুলিশের জালে ২ তৃণমূল কর্মী

0
0

এই সময় , আরামবাগ : গোঘাটে ছাত্রীর শ্লীলতাহানি ও তার বাবাকে মারধরের ঘটনায় বৃহস্পতিবার ভোররাতে দুই সক্রিয় তৃণমূল কর্মীকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ৷ তারা হল তাপস ঘোষ ও সুশান্ত ঘোষ৷ নির্যাতিতা শ্লীলতাহানির ঘটনায় অন্য তিন জনের সঙ্গে তাপসেরও নাম করেছিল৷ থানায়ও তার নামে এফআইআর করা হয়৷ আর ওই ছাত্রীর বাবাকে মারধরে সুশান্তই হল মূল অভিযুক্ত৷তবে দু'জনেই দাবি করেছে , শ্লীলতাহানি ও মারধরের ঘটনায় তারা জড়িত নয়৷ সু্শান্ত -তাপসের বক্তব্য , 'আমরা বেচারাম মান্নার অনুগামী বলে জেলা সভাপতি তপন দাশগুন্তের লোকজন আমাদের চক্রান্ত করে ফাঁসিয়েছে৷ কৃষি প্রতিমন্ত্রী বেচারাম মান্না ও তপন দাশগুন্ত বলেন , 'পুলিশ আইনমাফিক যা করার করবে৷ আমরা কোনও গোষ্ঠীর নই৷ আমাদের একটাই গোষ্ঠী , সেটা হল তৃণমূল৷ ' এক ধাপ এগিয়ে বেচারাম বলেন , 'কেউ যদি ডাকাতি বা ধর্ষণ করে নিজেকে আমার লোক বলে দাবি করে , তা হলে আমি কী করতে পারি ?'গোঘাটে ওই দুই ঘটনার প্রতিবাদে তৃণমূলেরই একটি গোষ্ঠী দোষীদের গ্রেন্তারের দাবিতে এসডিপিও -র অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখায়৷

নির্যাতিতার বাড়ির ও এলাকার লোকজনও একই দাবিতে এসডিপিওকে স্মারকলিপি দেন৷ এ দিকে , বৃহস্পতিবার গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির রাজ্য সম্পাদক মিনতি ঘোষ , সভানেত্রী আনোয়ারা মির্জা, অঞ্জু কর , অর্চনা মণ্ডল প্রমুখ আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে ছাত্রীর জখম বাবাকে দেখতে যান৷সিপিএম নেত্রীরা জানান , তাঁরা ওই পরিবারের পাশে আছেন৷ সব রকমের সাহায্যেরও আশ্বাস দিয়েছেন তাঁরা৷ পরে নেত্রীরা এসডিপিও অপরাজিতা রাইয়ের সঙ্গেও দেখা করেন৷ উল্লেখ্য , অভিযোগ প্রত্যাহার করার জন্য অভিযুক্তরা ছাত্রীর বাবাকে চাপ দেয়৷ তাঁকে তৃণমূল পার্টি অফিসে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ৷ এমনকি , এর পর তাঁকে চ্যাংদোলা করে রাস্তায় বসে থাকা একটি কুকুরের গায়ে ফেলে দেওয়া হয়৷ কুকুরটি রেগে গিয়ে কামড়ে দেয় তাঁর পায়ে৷ধৃত দুই তৃণমূল কর্মীকে এ দিন আরামবাগ আদালতে তোলা হয়৷ প্রিজন ভ্যানে বসেই সুশান্ত বলেন , 'আমরা জেলায় বেচারামের অনুগামী বলে জেলা সভাপতির অনুগামী তপন মণ্ডল , মোহন মণ্ডলরা আমাদের ফাঁসিয়েছেন৷ '

তার দাবি , শ্লীলতাহানির কোনও ঘটনাই ঘটেনি৷ মেয়েটির বাবাকে মারধর কিংবা কুকুরের কামড় খাওয়ানোর প্রশ্নই ওঠে না৷ তারা কেউ ঘটনাস্থলেই ছিল না৷ ' সুশান্তর অভিযোগ , মেয়েটির সঙ্গে তাপসের সম্পর্ক ছিল৷ মেয়েটিই ওকে ফোন করে বাড়িতে ডেকেছিল৷ সে আরও বলে , 'দলেরই একটি গোষ্ঠী সিপিএমের সঙ্গে সাঁট করে এই চক্রান্ত করেছে৷ ' তৃণমূলের ব্লক সভাপতি তপন মণ্ডল বলেন , 'জঘন্য অপরাধ করেও ওদের কোনও লজ্জা নেই৷ ধরা পড়েও গলাবাজি করছে৷ আমি আবারও বলছি , যারা অন্যায় করবে , তাদের শাস্তি পেতেই হবে৷ ' জেলা তৃণমূল সভাপতি তপন দাশগুন্তের কথায় , 'এখানে গোষ্ঠী বলে কিছু নেই৷ দোষীদের কোনওমতেই প্রশ্রয় দেওয়া হবে না৷ আইন আইনের পথে চলবে৷ পুলিশ তাদের কাজ করবে৷ ' মন্ত্রী বেচারাম মান্না বলেন , 'এ সব ব্যাপারে দলের যারা জড়িত থাকবে , তাদেরই শাস্তি পেতে হবে৷ ' পুলিশ জানিয়েছে , বাকি অভিযুক্তদেরও গ্রেন্তার করা হবে৷ ' অভিযুক্তদের আদালতে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ ---তন্ময় বৈরাগীদলের একাংশের চক্রান্ত , দাবি ধৃতদের৷


নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে সবুজসাথীতে না পড়ুয়ার

0
0

এই সময়, কোচবিহার: ধর্ষণ ও নারী নিগ্রহের প্রতিবাদে মুখ্যমন্ত্রীর সবুজসাথী প্রকল্প থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিল প্রতিবাদী ছাত্র৷ কোচবিহারের জেনকিন্স স্কুলের ওই ছাত্রর নাম নিরূপম দাস৷ বিজ্ঞান বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণির ওই ছাত্র রাজ্য সরকারের দেওয়া সাইকেল নিতে অস্বীকার করেছে৷ বৃহস্পতিবার অভিযোগ করে নিরূপম বলে, 'চারদিকে কানপাতলেই শোনা যাচ্ছে ধর্ষণের ঘটনা৷ সিতাইয়েও ধর্ষণ করে এক দশম শ্রেণির ছাত্রীকে খুন করা হয়েছে৷ নারী নির্যাতনের প্রতিবাদেই আমি সবুজসাথী প্রকল্পে দেওয়া সাইকেল না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি৷' তবে এ দিনই সিতাইয়ের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় পুলিশ মূল অভিযুক্ত-সহ দু'জনকে গ্রেপ্তার করেছে৷

কোচবিহারের পাটাকুড়ার বাসিন্দা নিরূপম ইতিমধ্যেই বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজে নিজেকে জড়িয়েছে৷ পড়াশোনার ফাঁকে দুঃস্থ মানুষকে সাহায্য করাই তার লক্ষ্য৷ গত ভূমিকম্পেও ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সাহায্য করতে নিরূপম পথে নামে৷ বাবা প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক নির্মল দাসও ছেলের ভূমিকা সমর্থন করেন৷ নিরূপম বলেন, 'রাজ্যে একাধিক নারী নির্যাতনের ঘটনায় আমার মন ভারাক্রান্ত হয়েছিল৷ প্রতিবাদের ভাষা খুঁজে পাচ্ছিলাম না৷' বুধবারই সাইকেল বিলির কথা ঘোষণা করে স্কুল৷ নিরূপম বলে, 'সাইকেল নয়, সরকার নারীদের নিরাপত্তা দিক৷ বন্ধ করুক খুন, হানাহানি৷' নিরূপমের বাবা বলেন, 'ছেলের সিদ্ধান্তের পাশে আমিও রয়েছি৷' তবে জেনকিন্স স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রামচন্দ্র মণ্ডল বলেন, 'গত কাল সবুজসাথী প্রকল্পে সাইকেল বিলি হয়েছে৷ তবে ওই ছাত্র সাইকেল নেয়নি বলে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে কোনও খবর নেই৷' সাইকেল প্রত্যাখ্যানে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ৷ তিনি বলেন, 'এ সব আসলে বাহানা৷ গোটা রাজ্যের ছাত্র-ছাত্রীরা মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া সাইকেল পেয়ে খুশি৷'

এ দিকে সিতাইয়ে দশম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় পুলিশ তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে৷ জানা গিয়েছে, পুলিশি জেরায় ধৃতদের একজন মত্ত অবস্থায় ধর্ষণ করে খুনের কথা স্বীকার করেছে৷ বিয়ের প্রস্তাবে ওই ছাত্রী রাজি না হওয়ায় তাকে খুন করা হয় বলে পুলিশ জানতে পেরেছে৷ মূল অভিযুক্ত সিতাইয়ের বাসিন্দা৷ সে লটারির টিকিটের ব্যবসা করত৷ কোচবিহারের পুলিশ সুপার সুনীল যাদব বলেন, ' গোটা ঘটনায় তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ মূল অভিযুক্ত ও তার বন্ধুকে আজ ধরা হয়েছে৷ পুলিশি জেরায় ধর্ষণ করে খুনের ঘটনা তারা স্বীকার করেছে৷'

শুরুতেই লাগামছাড়া ভিড়ে জমজমাট বেঙ্গল সাফারি

0
0

এই সময়, শিলিগুড়ি: দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রুগার ন্যাশনাল পার্ক কিংবা ব্যাঙ্ককের সাফারি ওয়ার্ল্ডের মতো উন্মুক্ত চিড়িয়াখানার গর্ব এ বার শিলিগুড়িও অনুভব করবে৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে যার প্রথম পর্যায়ের উদ্বোধন হয়ে গেল বৃহস্পতিবার৷ প্রথম দিনেই শহরের বাসিন্দাদের উত্‍সাহ আর উদ্দীপনায় সালুগাড়ায় গড়ে ওঠা গন্ডার-হরিণ-পাখি নিয়ে বেঙ্গল সাফারি সুপারহিট৷

শীতের রুখু জঙ্গল চিরে সোজা চলে গিয়েছে মাটি-পাথর বিছানো পথ৷ রাস্তার উপরে পড়ে রয়েছে শুকনো শাল, সেগুনের পাতা৷ দূর থেকে জংলা-সবুজ রঙের গাড়ি দেখতে পেয়েই দু'টো চিতল এক লাফে রাস্তার ওপারে চলে গেল৷ চালক গাড়ির গতি কমানোর আগেই আসন থেকে উঠে উচ্ছ্বসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে উঠলেন, 'ওই দ্যাখ অভিষেক, হরিণ! ছবি তোল!' এ দিন দুপুরে শিলিগুড়ির অদূরে সালুগাড়ার কাছে বৈকুণ্ঠপুর বনাঞ্চলের ওই অংশে বন দপ্তরের তৈরি সাফারি পার্কটি কিছু ক্ষণ আগেই উদ্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তার পরেই দল বেঁধে বন দপ্তরের বাসে চড়ে বসেছিলেন সাফারি পার্কের বন্যপ্রাণ দেখবেন বলে৷ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গী রাজ্যের বনকর্তাদের সঙ্গে ভাইপো অভিষেকও৷ হরিণ দেখেই মুখ্যমন্ত্রীর উচ্ছ্বাসে তখন বনকর্তাদের মুখেও চওড়া হাসি৷ ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে ওই সাফারি পার্কের শিলান্যাসের পরে দিনরাত এক করে প্রায় তিনশো হেক্টর জমির উপরে এই পার্ক তৈরির কাজে নেমেছিলেন বনকর্তারা৷ পার্ক তৈরির কাজে নেমে পদে পদে বুনো হাতির উত্‍পাত সহ্য করতে হয়েছে৷ পার্কের জন্য গন্ডার ধরে আনতে প্রায় নাভিশ্বাস ওঠার দশা হয়েছিল৷ তিস্তার চরে ঘুরে বেড়ানো গন্ডারকে ঘুমপাড়ানি গুলিতে কাবু করার পরে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পার্কে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়৷ না-হলে সেই দশাসই গন্ডার ফের পালিয়ে যেতে পারত৷ প্রাথমিক ভাবে পার্কে অবশ্য কয়েকটি ওয়াইল্ড ক্যাট, পাখি, ময়ূরও ছাড়া হয়েছে৷ আনা হয়েছে তিনটি কুনকি হাতিও৷ মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসায় এতদিনে তাঁদের পরিশ্রম সার্থক বলে মনে করছেন বনকর্তারা৷ জাঙ্গল সাফারি শেষে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, 'শিলিগুড়ির মুকুটে একটি নতুন পালক জুড়ে দিলাম৷'

পালকই বটে৷ গোটা সিকিম, ভুটান, নেপাল, দার্জিলিঙের পর্যটকেরা শিলিগুড়িতে পা রেখেই বেড়াতে যান৷ কাউকে এক-দু'রাত এই শহরে থাকতেও হয়৷ অনেকটা বাধ্য হয়ে থাকলেও বেড়ানোর কোনও জায়গা খুঁজে পেতেন না পর্যটকরা৷ আশপাশ পাহাড়-জঙ্গলে ঘেরা থাকলেও শিলিগুড়ি বললেই রসকষহীন একটা জায়গাই ভেসে উঠত চোখের সামনে৷ সেই চেহারাই বদলে দিতে গত বছর মুখ্যমন্ত্রী শিলিগুড়ির এই সাফারি পার্কের শিলান্যাসের সঙ্গেই তিনশো কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিলেন৷ ইতিমধ্যেই পার্কের পরিকাঠমো গড়ে তুলতে ব্যয় করা হয়েছে প্রায় ৭৮ কোটি টাকা৷ জু অথরিটি অব ইন্ডিয়া অনুমোদন দেওয়ার পরে রাজ্য জু অথরিটি নর্থ বেঙ্গল ওয়াইল্ড অ্যানিমাল পার্কের জন্য একটি কমিটিও গড়ে দিয়েছে৷ ওই কমিটি ঠিক করেছে, চারটি পর্যায়ে পার্কটি গড়ে তোলা হবে৷ প্রথম পর্যায়ে তৃণভোজী প্রাণীদের আনা হবে৷ দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ে আনা হবে চিতাবাঘ, রয়াল বেঙ্গল টাইগার, হিমালয়ের বিখ্যাত কালো ভালুক-সহ নানা ধরনের মাংসাশীদের৷ চতুর্থ পর্যায়ে চূড়ান্ত রূপ পাবে পার্কটি৷ এ দিন প্রথম পর্যায়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পার্কটিকে ঘিরে শিলিগুড়ির বাসিন্দাদের উত্‍সাহ মুখ্যমন্ত্রীর অনুমানকেই সঠিক বলে প্রমাণ করে দিল৷ পর্যটকেরা তো বটেই, শিলিগুড়ির মানুষও গর্ব করার মতো একটা পার্ক পেলেন৷ সাফারি পার্কের গাড়িতে ওঠার জন্য দিনভর চলল ঠেলাঠেলি৷ মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য আগামী এক মাস ছাত্র-ছাত্রী এবং তাঁদের অভিভাবকদের জন্য সাফারি পার্কের ফি মুকুব করে দিয়েছেন৷ পার্কের পরিচালন কমিটির অন্যতম সদস্য নান্টু পাল জানিয়েছেন, আগামী এক মাস দিনে চার বার করে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বিনে পয়সার ট্রিপ দেওয়া হবে৷

এ দিন পার্কের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেবেরও প্রশংসা করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তাঁর দাবি, পার্কের জন্য যখন জমি খোঁজা হচ্ছে তখন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রীই এই এলাকার খবর দেন৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'গজলডোবার পর্যটন প্রকল্পের জমি আমি নিজে খুঁজে বের করেছিলাম৷ গৌতমকে ধন্যবাদ, সাফারি পার্কের জমি খুঁজে বের করার জন্য৷' সালুগাড়ার এই পার্কের সঙ্গে সুকনাকেও জুড়তে চান মুখ্যমন্ত্রী৷ এই পার্কের পাশ দিয়েই সুকনা যাওয়ার জন্য বন দপ্তরের একটি রাস্তা রয়েছে৷ পর্যটকেরা ওই রাস্তা দিয়ে যাতে সুকনায় যেতে পারেন সেই ব্যাপারেও ভাবনাচিন্তা চলছে বলে বন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে৷ একই সঙ্গে গজলডোবার পর্যটন কেন্দ্রে বেড়াতে আসা পর্যটকেরাও যাতে পার্কে আসতে পারেন সে জন্য বৈকুণ্ঠপুর বনাঞ্চলের মধ্যে দিয়েও রাস্তা তৈরির কাজ হাতে নিয়েছে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তর৷

সেলফি-অটোগ্রাফের আবদারে বারবার থমকে গেল পদযাত্রা

0
0

সমীর মণ্ডল ■ কেশপুর

কখনও অটোগ্রাফের আবদারে , কখনও সেলফি তোলার অনুরোধে , আবার কখনও বরণমালায় থমকাল লাল ঝান্ডা৷ তার পর ফের এগোল বাড়তি উত্‍‌সাহ -উদ্দীপনা সম্বল করে৷ এক কথায় , এটাই বৃহস্পতিবার কেশপুর থেকে সিপিএমের পদযাত্রা পথের চিত্র৷ সকাল সাড়ে ৯টায় কেশপুর থেকে সূর্যকান্ত মিশ্রের নেতৃত্বে পদযাত্রা শুরু হওয়ার পর দেখা গেল , তৃণমূলের হুমকি উপেক্ষা করে রাস্তার দু'পাশে ভিড় জমিয়েছে জনতা৷ দীর্ঘ দিন পর কেশপুরের মাটিতে এত বড় মিছিল দেখা গেল সিপিএমের৷ মেদিনীপুর হয়ে মিছিল পৌঁছয় শালবনির গোবরুতে৷ হলদিয়া থেকে শুরু হয়ে অন্য একটি মিছিল এ দিনই এসে পৌঁছয় মেদিনীপুর শহরে৷ দু'টি পদযাত্রা এক সঙ্গে মেদিনীপুর শহর ঘুরে এগিয়ে যায় শালবনির পথে৷ কেশপুর বাজারে সূর্যকান্ত মিশ্রকে দেখে শীতের সকালে মাফলারে মুখ ঢেকেও হাত নাড়িয়েছে জনতা৷ ঝাঁটিয়াড়া গ্রামের মহিলারা ছুটে এসেছেন ফুল নিয়ে৷ কেশপুর গার্লস স্কুলের ছাত্রী পুনম পরভিন মিছিলের সামনে গিয়ে অটোগ্রাফের জন্য খাতা -কলম বাড়িয়ে দেয় সূর্যকান্ত মিশ্রের দিকে৷

প্রথমে ইতস্তত করলেও পরে স্বাক্ষর করেছেন বিরোধী দলনেতা৷ মেদিনীপুর শহরের এলআইসি মোড়ে ফের আটকায় পদযাত্রা৷ এ বার এক মহিলার সেলফির অনুরোধে৷ রাস্তার ধারে মহিলাদের দেখা গেল শাঁখ বাজিয়ে অভিনন্দন জানাতে৷ কেশপুরের পঞ্চমীতে সূর্যকান্ত মিশ্রকে একটি বিশাল মালা পরিয়ে দিতে এগিয়ে যান প্রায় ৯০ বছরের নাজিব খান৷ সেই মালা হাতে নিয়ে বৃদ্ধকেই তা পরিয়ে দেন সূর্যবাবু৷ কোথাও মিছিলে আটকে পড়া বাস থেকে নেমে স্কুলের শিক্ষাকেরা হাত মেলালেন নেতাদের সঙ্গে৷ আবার কোথাও দেখা গেল মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে পুলিশকর্মীদেরও চকোলেট বিলি করা হচ্ছে৷ নজরদারির জন্য প্রতিটি গ্রাম থেকে তৃণমূল কর্মীরা হাজির ছিলেন কেশপুর বাজারে৷ কোন এলাকা থেকে কারা যোগ দিল , তা দেখার জন্য মোবাইলে ছবিও তোলা হয়৷ বুধবারের তুলনায় এ দিন পুলিশি ব্যবস্থা কম ছিল৷ তবে মেদিনীপুর থেকে শালবনি যাওয়ার পথে কলাইচণ্ডী খালের কাছে মোতায়েন ছিল বিশাল পুলিশবাহিনী৷ বিকেলে শালবনির গোবরুতে শেষ হয় পদযাত্রা৷ শুক্রবার গোবরু থেকে পদযাত্রা শুরু হয়ে শালবনিতে শেষ হবে৷ তার পর হবে সমাবেশ৷





তৃণমূল নেতার বাড়িতে বিস্ফোরণে মৃত দুই ভাই

0
0

এই সময়, খয়রাশোল: খাগড়াগড়ের পর খয়রাশোল৷ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল বীরভূমের খয়রাশোল থানার আহম্মদপুর গ্রাম৷ তাতে মৃত্যু হয়েছে স্থানীয় এক তৃণমূল নেতার দুই ভাইয়ের৷ মৃতদের একজন খুন, বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র মজুত-সহ নানা ঘটনায় দীর্ঘদিন পুলিশের রেকর্ডে ওয়ান্টেড ছিল৷ বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে, ঘরের ছাদ ঝুলে যায়, ধসে পড়ে দেওয়াল৷ সিমেন্টের মেঝেতে বিরাট গর্ত তৈরি হয়৷ সুতলি বোমা ফেটে ওই কাণ্ড ঘটেছে বলে পুলিশ দাবি করলেও বিস্ফোরণের তীব্রতা দেখে খাগড়াগড়ের মতো কড়া বিস্ফোরকের উপস্থিতি ও জঙ্গি যোগের জল্পনা শুরু হয়েছে৷ বিস্ফোরণের অভিঘাত দেখে তাই মনে করা হচ্ছে৷

যদিও সেই জল্পনায় আমল দিচ্ছে না পুলিশ৷ বীরভূমের পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলেন, 'ঘটনাস্থল থেকে প্রচুর সুতলি পাওয়া গিয়েছে৷ আমাদের তাই প্রাথমিক অনুমান, সুতলি বোমা ফেটে এই বিস্ফোরণ হয়েছে৷ পুলিশ এ ব্যাপারে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা রুজু করেছে৷ তদন্তও শুরু হয়েছে৷ সিআইডিও ঘটনাটি দেখছে৷' যদিও এত বড় মাপের বিস্ফোরণ সত্ত্বেও ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের ডাকা দূরে থাক, এলাকাটি ঘিরেও রাখেনি পুলিশ৷ ফলে বিস্ফোরণের তথ্য-প্রমাণ লোপাট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে৷ ঘটনায় আরও কয়েক জনের আহত বা নিহত হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলেও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে৷ ওই সূত্রের খবর, রাতারাতি অন্যদের সরিয়ে ফেলা হয়৷ যদিও পুলিশ এর সত্যতা স্বীকার করেনি৷

বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বিস্ফোরণের পর শুক্রবার সকালে গিয়ে দেখা যায় ধসে পড়া পাকা ঘরটির ভিতরে পড়ে আছে বেশ কয়েকটি প্লাস্টিকের ড্রাম বোঝাই প্রচুর পাথরকুচি৷ ড্রামগুলিতেই বোমা মজুত ছিল বলে মনে করা হচ্ছে৷ পদস্থ আধিকারিকরা মুখ না খুললেও তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্তত ১০০ বোমা মজুত থাকার প্রমাণ আছে৷ ওই পরিমাণ বোমা কোনও কারণে একসঙ্গে ফেটে যাওয়াতেই ঘরের এত বড় ক্ষতি হয়েছে৷ মৃত শেখ তারিক ওরফে লিটন ও শেখ হাফিজুল সম্পর্কে দুই ভাই৷ ওই ঘরে বৃহস্পতিবার রাতে তারা শুয়েছিল বলে পরিবারের কর্তা তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতা জবির হোসেন জানিয়েছেন৷ মৃত দু'জনই তাঁর ভাই৷ ঘটনার পর থেকে অবশ্য সপরিবার বাড়ি ছেড়েছেন জবির৷

তিনি স্থানীয় পাঁচড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য৷ ফোনে যোগাযোগ করলে জবির বলেন, 'আমার ঘরে কেউ বোমা বানায়নি৷ বাইরে থেকে বোমা ছুড়েছে সিপিএমের লোকেরা৷ তাতে আমার দুই ভাই-ই মরে গেল৷' তা হলে সপরিবার তাঁর বাড়ি ছাড়ার কারণ কী? উত্তর দেননি জবির৷ তবে এলাকার তৃণমূল নেতারা গ্রামটিতে ঘাঁটি গেড়েছেন৷ ফলে মৃতদেহগুলি তাঁরা উদ্ধার করলেও মুখে কুলুপ এঁটেছেন গ্রামবাসীরা৷ নাম না প্রকাশের শর্তে আহম্মদপুরের এক বাসিন্দা বলেন, 'আমাদের মুখ খোলা খুব বিপজ্জনক৷ আমাদের বিপদ তিন রকমের৷ বিস্ফোরণ নিয়ে কিছু বললে কয়লা মাফিয়াদের হাতে খুন হব, না হয় শাসকদলের কোপে পড়ে বাড়িছাড়া হব৷ আবার কাগজে আমাদের নাম বেরোলে পুলিশ আমাদের হয়রানি করবে৷'

কয়লা মাফিয়ার প্রসঙ্গ আসছে কেন? পুলিশ সূত্রেই জানা গেল, এক কয়লা মাফিয়াকে খুনে অভিযুক্ত মৃতদের অন্যতম শেখ হাফিজুল৷ পুলিশের খাতায় সে দীর্ঘদিন ধরে গ্রামছাড়া৷ যদিও কাছেই বড়রা গ্রামে শ্বশুরবাড়ি কিংবা দুবরাজপুরে তাকে মাঝে মাঝে দেখা যায় বলে গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন৷ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সে বাড়ি এসেছিল৷ তার দাদা তথা তৃণমূল নেতা জবির হোসেন বলেন, 'বাড়ির সকলের সঙ্গে গল্পগুজব করে ছোট ভাই লিটনের সঙ্গে হাফিজুল এক ঘরে শুয়েছিল৷ ওই ঘরেই বোমা ছোড়ে দুষ্কৃতীরা৷' পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ঘরটি হাফিজুলই তৈরি করেছিল৷ অবস্থা এমনই যে সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিরা মহিলাদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে পুরুষরা বলতে শুরু করেন, 'মেয়েরা বাড়ির বাইরের লোকের সঙ্গে কথা বলে না৷' বেলার দিকে মহিলাদের গ্রাম থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়৷ তবে বিস্ফোরণের শব্দ শুনে বাড়িটিতে ছুটে যাওয়া গ্রামের মানুষ নাম গোপন রেখে জানিয়েছেন, বোমাই বানানো হচ্ছিল ঘরে৷ কয়লা মাফিয়াদের অভ্যন্তরীণ লড়াই কিংবা ইটভাটা নিয়ে গণ্ডগোলের জেরেই বোমা বানানো হয়ে থাকতে পারে৷ পাঁচড়ার তৃণমূল নেতা আশিস রায়ও বলেন, 'ইটভাটা নিয়ে গ্রামে একটা বিবাদ চলছিলই৷ পঞ্চায়েত দু'পক্ষকে ডেকে বিরোধ মিটিয়েও দিয়েছিল৷ কিন্ত্ত গণ্ডগোল চলাকালীনই হয়তো বোমা মজুত করা হয়েছিল৷ কাল রাতে সেই বোমা সরানোর সময়েই হয়তো ফেটে এই বিপদ হয়েছে৷'

গ্রাম সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ছোট ভাই শেখ তারিক ওরফে লিটন গ্রাম লাগোয়া হিংলা নদীর চরে একটি ইটভাটার মালিক ছিল৷ শেখ সাব্বান নামে আরও একজনের ইটভাটা ছিল এলাকায়৷ সেই নিয়ে দু'জনের তীব্র রেষারেষি ছিল৷ আর মেজ ভাই শেখ হাফিজুলের যোগ ছিল বেআইনি কয়লা পাচারে৷

কেন্দ্রের সতর্কবার্তায় নিরাপত্তা জোরদার

0
0

এই সময়, কলকাতা ও বসিরহাট: ওষুধের বাক্স বা প্যাকেটে ভরে আনা হতে পারে বিস্ফোরক৷ সেটাই রেখে দেওয়া হবে জনবহুল কোনও জায়গায়৷ এ ব্যাপারে গত দু'সপ্তাহে কেন্দ্রের মোট ছ'টি সতর্কবার্তা পাওয়ার পর রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় কয়েকদিন ধরে নিরাপত্তা নিয়ে চূড়ান্ত সতর্কতা নেওয়া হয়েছে৷ রাজ্য এবং কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে উত্তর ২৪ পরগনা এবং কলকাতা জুড়ে কার্যত চিরুনি তল্লাশি শুরু করেছেন পুলিশ আধিকারিকরা৷

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সতর্কতায় বলা হয়েছে, জঙ্গিরা রেল ব্রিজ, নদীর উপর সেতু, শপিং মলে হানা চালানো হতে পারে৷ এমনকি সেই সতর্কবার্তায় উল্লেখ রয়েছে, যেখানে প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজ হয় সেখানেও পরিকল্পনা করে বড় ধরনের নাশকতা ঘটাতে পারে জঙ্গিরা৷ এ বিষয়ে নির্দিষ্ট বেশ কিছু নামও পাঠানো হয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের রিপোর্টে৷ যে রিপোর্টে বলা হয়েছে, দুই সন্দেহভাজন বাংলাদেশি নাগরিক আনিসুর রহমান এবং মহম্মদ আনসারি ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ সীমান্ত পেরিয়ে এ পারে ঢুকে পড়েছে৷

জেএমবির ওই দুই সদস্য উত্তর চব্বিশ পরগনার বসিরহাটের কোনও জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে বলে গোয়েন্দারা সন্দেহ করছেন৷ এই কারণেই গত তিন-চারদিন ধরে বসিরহাট মহকুমা জুড়ে ব্যাপক তল্লাশি শুরু করেছে বিএসএফ এবং পুলিশ৷ পাশাপাশি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের অন্য একটি রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, জেএমবি জঙ্গিদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে হিজবুল তাহেরি বাংলাদেশি নামে অন্য একটি সংগঠনের তিন সদস্য সমীর, কিরণ ও সায়ন নাশকতা চালানোর জন্য সীমান্ত পেরিয়ে এপারে এসেছে৷

যাদের লজিস্টিক সাপোর্ট দিচ্ছে জেএমবির অপর এক সদস্য৷ কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সূত্রের খবর, তাঁদের কাছে সূত্র মারফত তথ্য এসেছে, দক্ষিণেশ্বর মন্দির এবং নৈহাটির কাছে জুবিলি ব্রিজেও নাশকতা ঘটানোর ছক করেছে জঙ্গিরা৷ সেই কারণে সেখানকার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে৷ শনিবারও দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে পুলিশ কুকুর নিয়ে গিয়ে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালানো হয়৷

এ দিকে শুক্রবার থেকে বসিরহাট মহকুমার সীমান্তবর্তী থানা এলাকায় পুলিশ নতুন করে নাকাবন্দি করে তল্লাশি শুরু করেছে৷ বসিরহাট, হাসনাবাদ, টাকির হোটেলগুলিতেও চলছে অনুসন্ধান৷ তল্লাশির সময় তুলে রাখা হচ্ছে ভিডিয়ো ছবি৷

গোয়েন্দা সূত্রের খবর, বসিরহাট সীমান্তে কোথাও জলপথ, কোথাও ডাঙাপথ রয়েছে৷ ফলে রাতের অন্ধকারে জঙ্গিরা এ দেশে ঢুকে সীমান্তবর্তী গ্রামগুলিতে যাতে আশ্রয় নিতে না পারে সেজন্য সতর্কতা নেওয়া হয়েছে৷ এ দিন বসিরহাটের এসডিপি ও-র নেতৃত্বে বসিরহাটে ইছামতী সেতুর উপর সীমান্তের দিক থেকে আসা গাড়িগুলিতে তল্লাশি চালায় পুলিশ৷ বৈধ কাগজপত্র না থাকায় কয়েকজনকে আটকও করা হয়েছে ৷





দামাল হাতি নিয়ন্ত্রণে জঙ্গলমহলে নতুন ডিভিশন

0
0

এই সময়: দলমার দামালদের নিয়ন্ত্রণ ও বাড়তি নজরদারিতে জঙ্গলমহলে বন দপ্তরের নতুন ডিভিশন তৈরি হচ্ছে৷ এর ফলে পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার বর্তমান তিনটি ডিভিশন থেকে ভেঙে কিছু এলাকা নিয়ে নতুন ডিভিশনটি হচ্ছে৷ যার সদর দপ্তর হওয়ার কথা ঝাড়গ্রামে৷

ধলভূম, সিংভূম, পালামৌ জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আসা হাতিদের নিয়ন্ত্রণ করতে ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ি, পুরুলিয়ার বান্দোয়ান, মানবাজার, বাঁকুড়ার ঝিলিমিলিকে নিয়ে নতুন এই ডিভিশনের পরিকল্পনা রয়েছে৷ বন দপ্তরের কর্তাদের বক্তব্য, মূলত লোকবল বাড়িয়ে হাতিদের উপর নজরদারি বাড়ানো, নির্দিষ্ট ওই জঙ্গলগুলির মধ্যেই যাতে হাতিগুলিকে রাখা যায় সেই চেষ্টা করা গেলেই প্রতিবছর এখানে হাতির হামলায় জীবন ও সম্পত্তির ক্ষতি অনেকটা ঠেকানো যাবে৷

দলমার দলছুট অন্তত ৩০টি হাতির দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ জঙ্গলমহল৷ ২০ জানুয়ারি রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে৷ এর আগে বাম আমলের শেষ দিকে ঝাড়গ্রামের ময়ূরঝরনাকে কেন্দ্র করে হাতিদের অভয়ারণ্য গড়ার পরিকল্পনা হয়েছিল৷ ভৌগলিক অবস্থানের কারণে ময়ূরঝরনার বিস্তৃত জঙ্গল একসময় ছিল বিভিন্ন দিক থেকে আসা হাতিদের বিচরণ ক্ষেত্র৷ তাই ওই জায়গাকে ঘিরে হাতিদের নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য পরিকল্পনা গড়া হয়৷ কিন্ত্ত পরে সেই পরিকল্পনা ঠাণ্ডা ঘরে চলে যায়৷

উত্তরবঙ্গে হাতির হানা ঠেকাতে সমস্যার কোনও স্থায়ী সমাধান হয়নি৷ আবার হাতির করিডরে রেল ট্র্যাক হওয়ায় ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু প্রায় নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে সেখানে৷ কিন্ত্ত গত কয়েক বছরে জঙ্গলমহলের তিন জেলায় ভিন রাজ্য থেকে নেমে এসে ঘাঁটি গেড়ে বসা হাতির আক্রমণে আতঙ্ক বাড়ছে৷ দলমা পাহাড় থেকে হাতির নেমে আসা শুরু হয় প্রায় তিন দশক আগে থেকে৷

নতুন ডিভিশন গড়ার পরিকল্পনা করতে গিয়ে বন দপ্তরের কর্তা ও বিশেষজ্ঞরা দেখেছেন, ১৯৯০ সালের পর থেকে ঝাড়খণ্ড ও ওডিশা লাগোয়া রাজ্যের এই তিন জেলার জঙ্গলে হাতির আনাগোনা বেড়েছে৷ প্রতি বছর খাদ্যের সন্ধানে বড় দল নেমে এলেও কিছু কিছু হাতি আর উল্টো পথে ফিরে না গিয়ে এখানেই থেকে যাচ্ছে৷ আর তখন থেকেই ওই হাতির হামলায় বছরে গড়ে ৩০-৪০ জন করে মারা পড়ছেন এ রাজ্যের ওই জেলাগুলিতে৷

বর্তমানে দলমা-ছুট অন্তত ৮০ টি হাতি রাজ্যের জঙ্গলগুলিতে রয়েছে বলে মনে করছেন বনকর্তারা৷ সেগুলি ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে খাদ্যের সন্ধানে ওই তিন জেলার বাইরেও ছড়িয়ে পরেছে৷



ঝলমলে কাঞ্চনজঙ্ঘায় মনখুশ মমতা, আরও একদিন পাহাড়ে

0
0

সঞ্জয় চক্রবর্তী ■ দার্জিলিং

মুখ্যমন্ত্রী এলেই পাহাড় হাসে৷ প্রকৃতিই যেন প্রমাণ করল শনিবার৷ শুক্রবারও কুয়াশায় ঢাকা ছিল দার্জিলিং৷ কনকনে ঠাণ্ডায় অস্বস্তি অনুভব করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ শনিবার সেই প্রকৃতিরই আমূল ভোলবদল৷ ঝলমলে ভাসল ম্যাল৷ সেখানেই নেতাজির জন্মজয়ন্তী উদয্যাপনে সেই প্রসঙ্গ উল্লেখও করলেন মমতা৷ তাঁর ভাষায় , ভগবানের আর্শীবাদ এটা৷ প্রথম বার তিনি পাহাড়ে এসেছিলেন রেলমন্ত্রী থাকাকালীন৷ সে বারও পাহাড়ের আকাশ গুমরে ছিল৷ তখনও মোর্চার সঙ্গে সম্পর্কই তৈরি হয়নি৷ কিন্ত্ত পরদিনই তাঁর সভার আগে রোদ উঠেছিল৷ বিমল গুরুংরা তাঁর সভায় যোগ দিয়েছিলেন৷ পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে নতুন সমীকরণের সূচনা হয়েছিল৷এ বারও যেন তাই৷ টানা কয়েক দিন আবহাওয়া খারাপ থাকার পরে শনিবার সকালে কনকনে ঠাণ্ডার মধ্যেই ঝলমলিয়ে উঠল প্রকৃতি৷ পর্যটক থেকে শুরু করে বাসিন্দারা প্রাণভরে কাঞ্চনজঙ্ঘাকে দেখলেন ম্যালে দাঁড়িয়ে৷

অথচ ভোরে তাপমাত্রা শূন্য ডিগ্রিতে নেমে গিয়েছিল৷ মুখ্যমন্ত্রী যে রিচমন্ড হিলে ছিলেন , সেখানে শিশিরও জমে বরফ হয়ে গিয়েছিল৷ রোদ ওঠায় অবশ্য সবই গলে যায়৷ কাঞ্চনজঙ্ঘাকে সাক্ষী রেখে সভা করতে পেরে মনখুশ হয়ে গেল মমতার৷ শিলিগুড়ি ফেরার কর্মসূচি বাতিল করে তিনি ফের চলে যান টাইগার হিলে৷ মুখ্যমন্ত্রীর আরও একটি স্বস্তির কারণ হল ম্যালের অনুষ্ঠানে জিটিএ -র অংশগ্রহণ৷ এই সফরের শুরু থেকে মুখ্যমন্ত্রীকে মোর্চা এড়িয়ে চললেও এ দিন ওই অনুষ্ঠানে আসেন জিটিএ -র ডেপুটি চিফ কর্নেল রমেশ অ্যালে৷ পরে অ্যালে বলেন , 'রাজ্য সরকার আমন্ত্রণ জানালে কেন আসব না৷ নর্থ পয়েন্ট স্কুল ময়দানে শুক্রবারের অনুষ্ঠানে আমাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলে যাইনি৷ ' তাঁর উপস্থিতিতেই অবশ্য পাহাড়ে খাম্বু-রাই ও লিম্বু জনজাতিদের জন্য দু'টি পৃথক উন্নয়ন পর্ষদ গঠনে তাঁর সিদ্ধান্তের কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি বলেন , কলকাতায় ফিরেই ওই দুই গোষ্ঠীর উন্নয়ন পর্ষদ গঠনের ব্যাপারে সরকারি প্রক্রিয়া শুরু করবেন তিনি৷ এজন্য মুখ্যসচিবকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন বলেও জানান৷




পূর্বস্থলীর পাখিরালয়ে কচ্ছপের মড়ক

0
0

দেবাশিস দাশগুপ্ত

প্রচুর কচ্ছপ মরে ভাসছে জলে৷ খবরই জানে না বন দপ্তর৷ নজরদারিতে চরম গাফিলতির নজির সামনে এল রাজ্যে৷ দিন দু'য়েক আগে পুরীর সমুদ্রতটে ভেসে উঠেছিল অলিভ রিডলে কচ্ছপের প্রায় ১৫০টি৷ তা নিয়ে হইচইয়ের মধ্যে চুপিসাড়ে পূর্বস্থলীর চুপি চরে প্রচুর কচ্ছপের মৃত্যুর খবর সামনে এল৷ শুক্রবার পরিযায়ী পাখির খোঁজে চুপিতে গিয়েছিলেন একটি প্রকৃতি প্রেমী সংগঠনের কয়েক জন সদস্য৷ নৌকায় চড়ে পাখি দেখার সময় তাঁদের নজরে পড়ে কচ্ছপের দেহ ভাসছে ভাগীরথীর সমান্তরাল ওই জলস্রোতে৷ স্থানীয় মাঝিদের সূত্রে পরে জানা যায় , দিন কয়েক আগে হাজার খানেক কচ্ছপ ওখানে ছেড়েছিল বন দন্তর৷ যদিও কচ্ছপ ছেড়েই দায় সেরেছিল বন দন্তর৷ কোনও নজরদারিই যে ছিল না , তা স্পষ্ট হয় বর্ধমানের বিভাগীয় বনাধিকারিক অজয় দাসের মন্তব্যে৷ তিনি 'এই সময় 'কে বলেন , 'কচ্ছপগুলি মারা গিয়েছে বলে আমার কাছে খবর নেই৷ কেউ আমাদের জানায়নি৷ তবে অবশ্যই খোঁজ নিয়ে দেখব৷ ' কলকাতায় বাজেয়ান্ত প্রায় এক হাজার কচ্ছপ ওই জলাশয়ে ছাড়ার পর আর কোনও নজর না রাখার ঘটনা সামনে আসায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বন্যপ্রাণী প্রেমীরা৷ বর্ধমানের পূর্বস্থলীর চুপি চরে ভাগীরথীর একটি অংশ ঢুকে অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদের চেহারা নিয়েছে৷ প্রতি বছরেই সেখানে ভিড় জমায় অসংখ্য পরিযায়ী পাখি৷ শুক্রবার একটি প্রকৃতি প্রেমী সংগঠনের তিন সদস্য সেখানে গিয়েই মৃত কচ্ছপগুলিকে ভেসে থাকতে দেখেন৷

তাঁদেরই একজন দেবদুলাল চন্দ্র 'এই সময় 'কে বলেন , 'আমরা ওই দৃশ্য দেখে অবাকহয়ে গিয়েছি৷ জলের মধ্যে চারিদিকে ছড়িয়ে রয়েছে অজস্র মৃতকচ্ছপ৷ এলাকা জুড়ে অসম্ভব দুর্গন্ধ বেরোচ্ছে৷ উপর থেকে যেটুকবোঝা গিয়েছে , তাতে মনে হয় এগুলি ইন্ডিয়ান ফ্ল্যাপ শেল টার্টল৷মাঝিরা ছাড়া কেউ কিছু জানে না দেখে বিস্মিত হন তাঁরা৷ চুপি চরেপর্যটকদের পাখি দেখিয়ে উপার্জনকারী মাঝি সহিবুল ইসলামবলেন , '৮ -৯ দিন আগে সন্ধেবেলায় একটি গাড়িতে প্রায় হাজারখানেক কচ্ছপ এনে এখানে ছাড়া হয়েছিল৷ জলে কচ্ছপগুলিকেছাড়ার জন্য আমাদের সঙ্গে দু'শো টাকার রফাও হয়৷ পরে অবশ্যপাড়েই কচ্ছপগুলিকে ছেড়ে দেন ওঁরা৷ তার পর থেকেই রোজকচ্ছপ মরছে৷ প্রচুর কচ্ছপ মারা গিয়েছে৷ ' মরছে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা কচ্ছপগুলিকে নিয়ে যাওয়ারচেষ্টাও করছেন৷ সহিবুল বলেন , 'আমরা একটা কচ্ছপকেও নিতেদিইনি৷ ' জলে ছাড়ার আগেই একটি ১০ -১২ কিলো ওজনের কচ্ছপমারা গিয়েছিল বলে দাবি করেন ওই মাঝি৷ মাঝিদের দাবি , কোনওরকমে ওই কচ্ছপগুলিকে ছেড়ে দিয়ে যেন ঘাড় থেকে বোঝানামানোর চেষ্টা করা হয়েছে৷ পূর্বস্থলীর বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়জানান , তিনি ঘটনাটি শুনেছেন কিন্ত্ত খোঁজ নিয়ে উঠতে পারেননি৷





সিপিএমের পদযাত্রায় খরচ তৃণমূলেরও

0
0

সমীর মণ্ডল ■ মেদিনীপুর

পদযাত্রা সিপিএমের৷ টাকা খরচ করছে তৃণমূল৷ না , সিপিএমকে জোগাতে নয়৷ নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতে৷ দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় সিপিএমের জাঠাকে যতই 'জ্যাঠামো ' বলে ব্যঙ্গ করুন না কেনও , পদযাত্রায় শাসক দলের উদ্বেদের পারা চড়েছে৷ পশ্চিম মেদিনীপুরের তৃণমূল নেতাদের কথায় তার প্রমাণ মিলেছে৷ দলের কেশপুর ব্লক সভাপতি সঞ্জয় পান বলেই দিলেন , 'আমরা আমাদের এলাকায় আমাদের দলের অস্তিত্ব কতটা আছে , তা বোঝানোর জন্য সিপিএমের পদযাত্রার পথের দু'ধারে ফ্ল্যাগ -ফেস্টুন -ব্যানার টাঙিয়েছিলাম৷ ' এতে যা খরচ হয়েছে , তা সিপিএমের পদযাত্রার ব্যয়ের থেকেও বেশি৷ বিশ্বাস হচ্ছে না তো ? শুধু কেশপুর ব্লকেই দু' দলের নেতাদের মুখে হিসাবটা শুনুন৷

তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সঞ্জয় পান বলেন , 'কেশপুরের বুড়াপাট থেকে ৩ , ৪ , ৫ , ৮ ও ১০ নম্বর অঞ্চলের আমড়াকুচি পর্যন্ত পথে শুধু ফ্লেক্স , পতাকা লাগাতেই দেড় লক্ষ টাকা খরচ করেছি৷ এছাড়া অনেকে ফ্লেক্সের ফ্রেম বানিয়ে দিয়েছেন৷ বিভিন্ন জন বিভিন্ন ভাবে সাহায্য করেছেন৷ ' সব মিলিয়ে খরচটা ২ লক্ষ ছাড়িয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রে খবর৷ সেখানে সিপিএমের খরচ নাকি লাখও পেরোয়নি৷ দলের কেশপুর জোনাল সম্পাদক মানিকলাল সেনগুন্ত বলেন , 'পদযাত্রীদের থাকা -খাওয়া ও অন্যান্য কিছু মিলিয়ে আমাদের জোনালে খরচ হয়েছে এক লক্ষ টাকারও কিছু কম৷ ' এ শুধু কেশপুর ব্লকের হিসাব৷ পশ্চিম মেদিনীপুরে চন্দ্রকোনা থেকে শালবনি পর্যন্ত এ ভাবেই অস্তিত্ব জাহিরের তাগিদে লক্ষ লক্ষ টাকা দেদার খরচ করেছে তৃণমূল৷

অস্তিত্ব জাহিরের এমন মরিয়া চেষ্টা কেনও শাসক দলের ? কেশপুরে তৃণমূলের ব্লক সভাপতির বক্তব্য , 'সিপিএমের অন্যায় তুলে ধরেছি৷ ' নেতাই কাণ্ড থেকে নন্দীগ্রাম আন্দোলন , সিঙ্গুরে তাপসী মালিক খুন , জ্ঞানেশ্বরী দুর্ঘটনা ইত্যাদি নানা প্রসঙ্গের সচিত্র বিবরণ দিয়ে ফ্লেক্স টাঙিয়েছে তৃণমূল৷ কে জোগালো এত বিপুল পরিমাণ অর্থ?কেশপুরের তৃণমূল নেতা সঞ্জয় বলেন , 'মানুষ সিপিএমকে আর দেখতেই চায় না৷ যাঁরা সিপিএমের কাছে আগে অত্যাচারিত হয়েছেন , তাঁরাই যেচে আমাদের অর্থ সাহায্য করছেন৷ ' সিপিএমের জোনাল সম্পাদক মানিকলাল ব্যঙ্গ করেন , 'খরচ যত ওরা বলছে , তার চেয়ে বেশি হয়েছে৷ আমাদের কর্মীদের ভয় দেখাতে রাতভর যে বোমাবাজি করেছে , তার হিসেব তো আর দিচ্ছে না৷ ' ইতিমধ্যে পাল্টা পদযাত্রার কর্মসূচি নিয়েছে তৃণমূল৷ দলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কমিটির কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোত্ ঘোষ বলেন , '২৫ -২৮ জানুয়ারি সমস্ত ব্লকে পদযাত্রা হবে৷ শিল্পের নামে বামেদের নাটকের প্রতিবাদে ২৮ জানুয়ারি শালবনিতে হবে জনসভা৷ থাকবেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় , অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়৷ '

জোটের উগ্র জল্পনায় রাশ টানছে সিপিএম

0
0

এই সময়, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, সবং: দিন কয়েক আগেও জোট নিয়ে দুই শিবিরে যে আকুলতা দেখা যাচ্ছিল, তাতে কিছুটা হলেও লাগাম টানতে বাধ্য হল আলিমুদ্দিন স্ট্রিট ও বিধান ভবন৷ এ রাজ্যে বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস ও সিপিএমের জোট আদৌ হবে কি না সেই প্রশ্নের খোলাখুলি উত্তর এড়িয়ে যাওয়ার কৌশল নিতে শুরু করেছেন দুই দলেরই রাজ্য নেতৃত্ব৷ ১০ জনপথের 'ইঙ্গিতপূর্ণ' নীরবতা এবং সিপিএম পলিটব্যুরোর জোট নিয়ে বিবৃতির পর আগ বাড়িয়ে খেলতে চাইছেন না রাজ্য নেতারা৷ তবে পশ্চিমবঙ্গে এই জোটকে ঘিরে বিবিধ জল্পনা নজর এড়ায়নি বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বেরও৷ রবিবারই প্রাক্তন বিজেপি রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহা দাবি করেন, এ নিয়ে কৌতূহল প্রকাশ করেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷

শনিবারই দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন রাহুল৷ তাঁর দাবি, মোদী সে সময় জানতে চান পশ্চিমবঙ্গে সিপিএম ও কংগ্রেসের মধ্যে জোট আদৌ হচ্ছে কি না৷ রাহুল অবশ্য মোদীকে জানিয়ে এসেছেন এ ব্যাপারে সিপিএম ও কংগ্রেসের দিল্লি নেতৃত্বই সিদ্ধান্ত নেবেন৷ সে ব্যাপারে জানার সুযোগ বরং বিজেপির দিল্লির নেতাদের বেশি৷ বস্ত্তত, মোদীর এই কৌতূহল থেকেই স্পষ্ট আগামী বিধানসভা ভোটে এই জোটের সম্ভাবনাকে হাল্কা চোখে নিচ্ছে না বিজেপিও৷ কিন্ত্ত, এই মুহূর্তে জোট-পিপাসু দুই দলেরই রাজ্য নেতারা সাবধানী পথেই চলতে চান৷ সিঙ্গুর-সাঁকরাইলের জোট-বার্তার পর থেকে সিপিএম নেতৃত্ব সরাসরি কংগ্রেসের নাম নিয়ে কোনও মন্তব্য করছেন না৷ এ দিন আলিপুরদুয়ারে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, 'জোট নিয়ে তো ইতিপূর্বে বহুবার সওয়াল করেছি৷ এখন আর নতুন করে কিছু বলতে চাই না৷ আমাদের দলের অবস্থান পরিষ্কার করা হয়েছে৷ বল এখন ওঁদের কোর্টে৷ এখন সিদ্ধান্ত ওঁদের নিতে হবে৷' সূর্যর এই বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট ১ ফেব্রুয়ারি রাহুল গান্ধীর সঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের বৈঠকের আগে বাড়তি কিছু বলতে চান না সিপিএম নেতারা৷ এ দিনও সূর্য বলেন, 'মানুষের জোট হয়ে গিয়েছে৷ বাকিটা সময়ের সঙ্গে স্পষ্ট হবে৷'

বস্ত্তত, কংগ্রেস হাইকম্যান্ড কোন দিকে ঝুঁকবে তা নিয়ে বামেদের মতোই ধোঁয়াশায় রয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব৷ তবু জোটের পক্ষেই সওয়াল করে চলেছেন অধীর চৌধুরীরা৷ এ দিন কোচবিহারে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বলেন, 'নেতা ও কর্মীরা সকলেও সওয়াল করছেন৷ কিন্ত্ত সওয়াল করা এক জিনিস এবং সিদ্ধান্তে আসা এক জিনিস৷ আমি রাজ্যের নেতা৷ দিল্লি যে ভাবে সিদ্ধান্ত নেবে সেই ভাবে চলব৷ তবে কোনও ভাবে তৃণমূলের সঙ্গে জোট হবে না৷' রবিবার অবশ্য সবংয়ে মানস ভুঁইয়ার খাসতালুকে নিচুতলার কংগ্রেস কর্মীর বাম-কংগ্রেস জোটের পক্ষেই সওয়াল করেন৷ শাকিল আহমেদ, কংগ্রেস পরিষদীয় নেতা মহম্মদ সোহরাবের উপস্থিতিতে নিচুতলার কংগ্রেস কর্মীরা সাফ জানিয়ে দেন, হয় বামেদের সঙ্গে জোট অথবা 'একলা চলো'র পথে হাঁটতে চান তাঁরা৷

মানস ভুঁইয়া কংগ্রেসের সেই ব্যতিক্রমী নেতা যিনি লাগাতার বামেদের সঙ্গে জোটের বিরোধিতা করছেন৷ প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন এই সভাপতি নির্বাচনে একলা চলার পক্ষপাতী৷ সেই দৃষ্টিকোণ থেকে এ দিন মানস নিজের খাসতালুকেই কিঞ্চিত্‍ ধাক্কা খেলেন৷ কর্মী সম্মেলেন নিচুতলার কর্মীরা কিন্ত্ত বামেদের সঙ্গেই জোটের পক্ষে মত দিয়েছেন৷ এ দিন সবং বিধানসভার ১৬টি অঞ্চল থেকে প্রায় ২৫০০ কংগ্রেস কর্মী এই সম্মেলনে অংশ নেন৷ সম্মেলনে উপস্থিত ৭১ জন কর্মীকে এই জোট নিয়ে সংবাদমাধ্যমের তরফে প্রশ্ন করা হলে তাঁদের মধ্যে ৪৬ জন সাফ জানিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসকে ক্ষমতা থেকে উত্‍খাত করতে হলে বামেদের সঙ্গেই জোট করতে হবে৷

সবংয়ের খরপরা গ্রামের নিমাই জানা, বরদা গ্রামের অনন্ত শাসমল, সুভাষচন্দ্র জানা, দেভোগ গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান মৌসুমি দাস দত্তর কথায়, 'সিপিএমের থেকে তৃণমূল অনেক বেশি অত্যাচার করছে৷ তাই তৃণমূলকে হারাতে জোট প্রয়োজন৷' ১৯ জন কংগ্রেস কর্মী বলেন বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের একা লড়াই করা উচিত৷ সম্মেলনে থাকা ৬ কংগ্রেস কর্মীর বক্তব্য, 'হাত চিহ্ন না হলে ভোট দেব না৷ জোট নেতারা ঠিক করবে৷ তবে সবং আসন কংগ্রেসকে ছাড়তে হবে৷' নিচুতলার এই মনোভাব বুঝেই শাকিল আহমেদ খান তাঁর ভাষণে বলেন, 'আগেও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব প্রদেশ নেতাদের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল৷ এ বারও আলোচনায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে৷ এমন কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না যাতে কংগ্রেসের ক্ষতি হয়৷' দিল্লির নেতারা যে সিদ্ধান্ত নেবেন তা সবাই মেনে চলবে বলে মন্তব্য করেন মানসও৷

তবে জোট নিয়ে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের অস্বস্তি বাড়িয়েছেন সিপিএমের পলিটব্যুরো নেতা পিনারাই বিজয়ন৷ এই বছর কেরালাতেও বিধানসভা নির্বাচন৷ যেখানে কংগ্রেস সিপিএমের মূল প্রতিপক্ষ৷ এ দিন এক সাংবাদিক বৈঠকে বিজয়ন অভিযোগ করেন ইউডিএফের মুখ্যমন্ত্রী ওমেন চান্ডি সঙ্ঘ পরিবারের প্রতি নরম অবস্থান নিয়ে চলছেন৷

সারদা ঝাঁজ থাকবে অমিত-ভাষণে, ধন্দ

0
0

এই সময়: কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং পশ্চিমবঙ্গে এসে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে সম্প্রতি তুলোধোনা করে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে৷ কিন্ত্ত সারদা নিয়ে একটি শব্দও খরচ করেননি তিনি৷ বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বের আশা, রাজনাথের সেই 'অনুচ্চারিত' শব্দগুলিই সোমবার শোনা যাবে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের গলায়৷

তবে বাম এবং কংগ্রেসের মতো বিরোধী দলগুলি মনে করছে, সারদা কেলেঙ্কারির তদন্ত নিয়ে আর বিশেষ মাথাব্যাথা নেই অমিত শাহদের৷ বরং সাম্প্রদায়িক সমীকরণের মাধ্যমেই নিজেদের ভোট ব্যাঙ্ক ধরে রাখতে চাইছে বিজেপি৷ গত লোকসভা ভোটে ১৭% ভোট বিজেপি পেয়েছিল৷ কিন্ত্ত পরবর্তী কয়েকটি ভোটে বিজেপির ভোটের হার শুধুই নিম্নগামী৷ আপাতত গত লোকসভা ভোটের নিরিখে ভোট কিছুটা বাড়ানোই এখন বিজেপির উদ্দেশ্য৷ তাই অমিত শাহ আজ হাওড়ার ডুমুরজলার জনসভায় সারদা নিয়ে বলুন বা না বলুন, উদ্বাস্ত্ত সমস্যা কিংবা কালিয়াচক নিয়ে সরব হবেনই৷ সে ক্ষেত্রে 'হিন্দুত্ববাদী' হিড়িক তুললে গত বিধানসভার তুলনায় ভোট কিছুটা হলেও বাড়তে পারে৷

সারদা কেলেঙ্কারি নিয়ে আদৌ বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি হাওড়ার জনসভায় কতটা গলা চড়াবেন, তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে বঙ্গ বিজেপির৷ তাই দু'দিন আগেই ৬ মুরলীধর সেন লেন থেকে 'নোট' পাঠিয়ে অমিত শাহকে অনুরোধ করা হয়েছে তিনি যেন সারদা-কাণ্ড নিয়ে অন্তত দু-চার লাইন বলেন৷ কেন না, সিপিএম, কংগ্রেসের মতো দলগুলি লাগাতার প্রচার করে চলেছে যে মোদী-মমতা আঁতাঁত হয়ে গিয়েছে৷ তাই রাজনাথের মতো অমিত শাহও যদি সারদা নিয়ে কিছু না বলেন, তবে বিরোধী দলগুলির অভিযোগই প্রতিষ্ঠিত হবে৷ ২০১৪ সালের ৩০ নভেম্বর ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে অমিত শাহ শেষ বার জনসভা করেছিলেন এ রাজ্যে৷ সেখানে 'সারদা-কাণ্ড' নিয়ে মমতাকে চড়া সুরে আক্রমণ করেছিলেন তিনি৷ রাজ্য বিজেপির এক শীর্ষ নেতার কথায়, 'সারদা ট্রেন আমরা ফস্কেছি৷ তার জন্য কেন্দ্রীয় নেতারাই দায়ী৷ কারণ, গত এক বছর সারদা-কাণ্ড নিয়ে তাঁরা রাজ্যে এসে একটি শব্দও খরচ করেননি৷ অমিত শাহের উচিত আজ হাওড়ার জনসভায় সারদা নিয়ে মমতাকে আক্রমণ করে প্রায়শ্চিত্ত করা৷'

শুধু তাই নয়, সারদা নিয়ে কতটা সুর চড়াচ্ছেন অমিত শাহ তার উপরেও এ রাজ্যে বিজেপির রাজনৈতিক ভবিষ্যত্‍ নির্ভর করছে বলে মনে করছে দলের একাংশ৷ ২০১৪-র জনসভায় অমিত শাহ সারদা নিয়ে যতটা সোচ্চার ছিলেন, সোমবার হাওড়ায় তাঁর ভাষণে সেই ঝাঁজ না থাকলে বিরোধী দলগুলি নতুন করে মমতা-মোদী আঁতাঁতের অভিযোগ তোলার মওকা পেয়ে যাবে৷ কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান অবশ্য বলছেন, 'অমিত শাহ সারদা নিয়ে সোমবার কী বলবেন, তাতে কিছু এসে যায় না৷ কারণ, বিজেপি এমন কিছু করছে না, যাতে তৃণমূল অস্বস্তিতে পড়ে৷ মমতাও এমন কিছু করছেন না, যাতে বিজেপির অস্বস্তি বাড়ে৷ ফলে বোঝাপড়াটা স্পষ্ট৷'

প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের মতে, সারদা নিয়ে দিল্লিতে মমতা-মোদীর বোঝাপড়া হয়ে গিয়েছে৷ তাই রাজ্য বিজেপি নেতারা এখন সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করে কট্টর হিন্দু ভোট ব্যাঙ্ক বাঁচিয়ে রাখতে চাইছেন৷ তাই কালিয়াচকের মতো সাম্প্রদায়িক ইস্যু নিয়ে দিল্লি পর্যন্ত ছুটছেন তাঁরা৷ একই মত সিপিএমেরও৷ দলের রাজ্য নেতাদের যুক্তি, বিধানসভা ভোটের আগে কালিয়াচক নিয়ে বিজেপির অতি-সক্রিয়তা থেকেই স্পষ্ট যে তারা সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করেই বাংলায় অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে চাইছে৷ সিপিএম সাংসদ মহম্মদ সেলিম অবশ্য বলছেন, 'আগে অমিত শাহ কি বলে শুনি, তার পরই যা বলার বলব৷' শেষ পর্যন্ত আজ হাওড়ার ডুমুরজলার দলীয় জনসভায় অমিত শাহ কোন সুরে ভাষণ দেন, তার দিকেই তাকিয়ে আছেন বঙ্গ রাজনীতির কুশীলবরা৷

শেষবেলায় হানা দিল শৈত্যপ্রবাহ

0
0

এই সময়: যাওয়ার আগে 'কাঁপিয়ে' দিয়ে যাও!

শেষবেলায় শীতপ্রেমীদের আকুতিতেই যেন সাড়া দিল শীত৷ উত্তুরে হাওয়া স্বমহিমায় ফিরতেই শৈত্যপ্রবাহের কবলে চলে গেল বাংলা৷ কলকাতার রাতের তাপমাত্রা নামল ১১.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে৷ চলতি মরসুমে এটাই সর্বনিম্ন৷ কিন্ত্ত মহানগরের শীতলতম দিনেও শীত স্থায়ী হওয়ার সুখবর জুটল না৷ আবহবিদরা জানিয়ে দিলেন, ১-২ দিন থাকবে জাঁকিয়ে ঠান্ডা৷ তার পর আবার মেঘের দখলে চলে যাবে আকাশ৷ মাসের শেষ দিকে হানা দিতে পারে বৃষ্টিও৷ মেঘ-বৃষ্টির পালা চোকার পর শীত যদি ফেরেও, এতটা কড়া হবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে আবহবিদরা৷

নভেম্বরে একের পর নিম্নচাপ শীতের আগমনীতে বাধার পাঁচিল তুলেছিল৷ মাঝ-ডিসেম্বরে যা-ও বা শীত এল, শেষের দিকে পশ্চিমি ঝঞ্ধা দুর্বল হতে শুরু করায় ফিকে হয়ে যায় ঠান্ডা৷ জানুয়ারির প্রথম তিন সপ্তাহে সেই দৃশ্যে কোনও বদল হয়নি৷ সাম্প্রতিক পশ্চিমি ঝঞ্ধাটি কাশ্মীর-হিমাচল-উত্তরাখণ্ডের পাহাড়ে প্রবল তুষারপাত ঘটানোয় আশার আলো দেখেন আবহবিদরা৷ সন্দাকফু-ফালুটেও পুরু বরফ পড়ে৷ সবমিলিয়ে নিজের ছন্দে ফেরার সুযোগ পায় উত্তুরে হাওয়া৷ সেই সঙ্গে আকাশ পরিষ্কার হয়ে যাওয়ায় কনকনে হাওয়া ঢোকার পথে আর কোনও বাধাও ছিল না৷ পারদও তাই নামল লাফিয়ে লাফিয়ে৷ বুধবার, ২০ জানুয়ারি আলিপুরের তাপমাত্রা ছিল ১৯.১ ডিগ্রিতে৷ রবিবার চার দিনের মাথায় পারা নেমে গেল প্রায় ৮ ডিগ্রি নীচে৷ বুধবার শহরের পারা ছিল স্বাভাবিকের পাঁচ ডিগ্রি উপরে৷ এ দিন তা নামল স্বাভাবিকের তিন ডিগ্রি নীচে৷ জানুয়ারির ২৪ তারিখ ১১ ডিগ্রি ছোঁয়া ঠান্ডা ইদানীংকালে খুব একটা দেখা যায়নি, বলছেন আবহবিদরাই৷ উত্তর শহরতলিতে ঠান্ডা আরও জাঁকিয়ে বসেছে৷ দমদমে পারা রেকর্ড হয়েছে ১০.২ ডিগ্রি৷

অবশ্য শীতের কামড় আরও কড়া ছিল জেলায়৷ পুরুলিয়ার তাপমাত্রা নেমে যায় ৬.৭ ডিগ্রিতে৷ স্বাভাবিকের চেয়ে পাঁচ ডিগ্রি কম৷ হাওয়া অফিসও সঙ্গে সঙ্গে 'শৈত্যপ্রবাহ' চলছে বলে ঘোষণা করে দেয়৷ শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়েছে বীরভূমের শ্রীনিকেতনও৷ সেখানে তাপমাত্রা ছিল ৭.৪ ডিগ্রি৷ বাঁকুড়া, মেদিনীপুর, আসানসোলে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের পাঁচ ডিগ্রি নীচে না নামলেও, সেখানেও শৈত্যপ্রবাহের পরিস্থিতি চলছে৷ আজ, সোমবারও শৈত্যপ্রবাহের সতর্কতা জারি রেখেছে হাওয়া অফিস৷ কলকাতা ও লাগোয়া এলাকাতেও পারা থাকবে ১১-১২ ডিগ্রির আশপাশে৷ আবহবিদরা জানাচ্ছেন, বাংলার পড়শি দুই রাজ্য বিহার, ঝাড়খণ্ডে ঠান্ডা জোর কামড় বসিয়েছে৷ বিহারের পূর্ণিয়ার পারা নেমে গিয়েছে ৪.৮ ডিগ্রিতে৷ পাটনা, রাঁচি দুই রাজধানী শহরের পারাই রয়েছে ৬.০ ডিগ্রিতে৷

কিন্ত্ত ঘটনা হল, শীতের এই দাপট দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার বিশেষ সম্ভাবনা দেখছেন না আবহবিদরা৷ কারণ, কাশ্মীরের পথে পা বাড়িয়েছে আরও একটি পশ্চিমি ঝঞ্ধা৷ এই মুহূর্তে সেটি রয়েছে পাকিস্তান লাগোয়া আফগানিস্তানে৷ ঝঞ্ধাটির প্রভাবে পাহাড়ে নতুন করে তুষারপাত হবে৷ কিন্ত্ত সাময়িক ভাবে মেঘ ঢুকিয়ে সমতলে উত্তুরে হাওয়ার পথে পাঁচিলও তুলে দেবে৷ যে ইঙ্গিত দেখে উত্তর ভারতের সর্বত্র সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বাড়ার আভাস দিয়েছে মৌসম ভবন৷ তাপমাত্রা বাড়বে পূর্ব ভারতেও৷ আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের আবহবিদ গোকুলচন্দ্র দেবনাথ বলেন, '১-২ দিন এই ঠান্ডা থাকবে৷ তার পর তাপমাত্রা আবার ঊর্ধ্বমুখী হবে৷ মেঘ ঢোকার সম্ভাবনা রয়েছে৷' বৃহস্পতি-শুক্রবার নাগাদ কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে হাল্কা বৃষ্টির সম্ভাবনা৷

সাধারণত, ঝঞ্ধা চলে গেলে তুষারপাতের প্রভাবে আবার উত্তুরে হাওয়া জোরদার হয়৷ কিন্ত্ত এক্ষেত্রে তা যে হবেই, এমনটা হলফ করে বলতে পারছেন না আবহবিদরা৷ কারণ, এর ঠিক পিছনেই রয়েছে আরও একটি ঝঞ্ধা৷ শীতের ভবিষ্যত্‍ তাই অন্ধকারেই৷

ভিন্ রাজ্যে যক্ষ্মা ছড়াচ্ছেন শ্রমিকরা

0
0

Jhilam.Karanjai@timesgroup.com

ঘটনা ১: বছর চারেকের ছেলের টানা কাশি দেখে ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে এসেছিলেন বিনয় পাল (নাম পরিবর্তিত)৷ মাসখানেক আগেই বছর চল্লিশের এই ব্যক্তি কেরালা থেকে বাসন্তীর গ্রামে ফিরেছেন৷ কফ পরীক্ষার পর জানা গেল, শিশুটি যক্ষ্মা আক্রান্ত৷ এর পর ডাক্তার বিনয় ও তাঁর স্ত্রীর কফ পরীক্ষার জন্য সুপারিশ করেন৷ দেখা যায়, দু'জনেই যক্ষ্মায় আক্রান্ত৷ তিন জনকে নথিভুক্ত করে ডটস নিয়ম মেনে বিনামূল্যে ওষুধ দেওয়া শুরু করেন চিকিত্‍সকরা৷ কিন্ত্ত মাস চারেক পর হঠাত্‍ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আসা বন্ধ হয়ে যায় বিনয়ের৷ ডাক্তাররা জানতে পারেন, এক আড়কাঠির পাল্লায় পড়ে ফের কেরালার ইটভাটায় কাজ করতে চলে গিয়েছেন বিনয়৷ নির্দিষ্ট ঠিকানা জানে না পরিবার৷

ঘটনা ২: আমিনুল নাসিরি (নাম পরিবর্তিত) গুজরাটে একটি সোনার গয়না তৈরির কারখানায় কাজ করতেন৷ ঈদের ছুটিতে মালদহে গ্রামের বাড়ি ফেরমাত্র কাশি-সর্দি-জ্বর৷ স্থানীয় গ্রামীণ হাসপাতালের ডাক্তার দেখামাত্র থুথু পরীক্ষার জন্য পাঠান৷ দেখা গেল, যক্ষ্মা৷ শুরু হল ডটস চিকিত্‍সা৷ কিন্ত্ত মাস চারেক পর গুজরাটের কারখানা থেকে ফোনে ভয় দেখানো হয়, দ্রুত কাজে না-যোগ দিলে চাকরি থাকবে না৷ ডাক্তারের নিষেধ থাকা সত্ত্বেও ভিন্রাজ্যে রওনা হতে বাধ্য হন আমিনুল৷ এবং কাজে যোগ দেন তাঁর যক্ষ্মার কথা লুকিয়েই৷

উপরের এই দু'টি ঘটনা বিচ্ছিন্ন নয়৷ কাজের খোঁজে পশ্চিমবঙ্গ থেকে ভিনরাজ্যে পাড়ি দেওয়া হাজার হাজার লোক ঠিক এ ভাবেই যক্ষ্মা নিরাময়ে বিনামূল্যের চিকিত্‍সা মাঝপথে বন্ধ করে চলে যাচ্ছেন৷ স্বাস্থ্য দপ্তরের যক্ষ্মা বিভাগের চিকিত্‍সকদের আক্ষেপ, রাজ্য সরকার কিংবা পঞ্চায়েতে দিনদরিদ্র যক্ষ্মা রোগীদের জন্য কোনও সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প না-থাকায় তাঁরাও অসহায়৷ গুজরাট, কেরালা, তামিলনাডু, মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্যে গিয়ে এই রোগীরা যক্ষ্মার জীবাণু ছড়িয়ে সেখানে নতুন করে অসংখ্য মানুষকে সংক্রামিত করছেন নিয়মিত৷ স্বাস্থ্য দপ্তরে যক্ষ্মা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত স্বাস্থ্য অধিকর্তা শান্তনু হালদার বলেন, 'এটা শুধুমাত্র এ রাজ্যের সমস্যা নয়৷ সমস্ত রাজ্যে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে অন্তরায় এই দিনমজুর শ্রমিকরা৷ এ জন্যই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরামর্শে অভিবাসী শ্রমিকদের এইচআইভি চিহ্নিত করার ক্যাম্পগুলিতে এখন যক্ষ্মা চিহ্নিত করার পরীক্ষাও শুরু হয়েছে৷' তিনি আরও জানান, রাজ্যে ঢোকার পরই ক্যাম্প করে অভিবাসী শ্রমিকদের শরীরে এই দু'টো সংক্রামক রোগের উপস্থিতি চিহ্নিত করায় জোর দেওয়া হচ্ছে৷

নব্বইয়ের দশকে যক্ষ্মা নির্মূল করতে চালু হয় ডটস৷ স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্র জানাচ্ছে, চিকিত্‍সা অসম্পূর্ণ রাখা এই সমস্ত অভিবাসী শ্রমিকদের শরীরের লুকিয়ে থাকা যক্ষ্মা জীবাণু আরও অনেক জটিল আকার নেয়৷ সাধারণ ডটস-এর ওষুধে তা সারে না৷ এর পর শুরু করতে হয় আরও ব্যয়বহুল ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট যক্ষ্মার চিকিত্‍সা৷ এই ক্ষেত্রে অবশ্য রোগীদের মৃত্যুর হার সাধারণ যক্ষ্মার থেকে অনেকটাই বেশি৷ ফলে, পশ্চিবঙ্গ থেকে যক্ষ্মা নির্মূল করার অন্যতম বড় প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে চিকিত্‍সা অসম্পূর্ণ রাখা এবং রোগ লুকিয়ে রাখা অভিবাসী রোগীরা৷ অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল হওয়ায় এই সমস্ত অভিবাসীদের ভিন্রাজ্যে কাজে যাওয়া থেকে বিরত করা যায় না৷ সমস্যার মূলটা আসলে সেখানেই৷

খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে সুমারির উদ্যোগ সরকারের

0
0

এই সময়: মালদহের আম, জলপাইগুড়ির আনারস বা বারুইপুরের পেয়ারার খ্যাতি সকলেরই জানা৷ এ সব ফলের ফলন কেমন রাজ্য সরকারের কাছে তা নিয়েও তথ্যের খামতি নেই৷ কিন্ত্ত রাজ্যে ঠিক কতগুলি আম, আনারস বা পেয়ারাকে কেন্দ্র করে জ্যাম-জেলির কারখানা রয়েছে? কোথায় রয়েছে? এর কোনও সঠিক তথ্য রাজ্যের হাতে নেই৷ অথচ বিদেশে গিয়ে প্রচার চালিয়ে বা গুজরাটি কায়দায় বিনিয়োগ টানতে শিল্প সম্মেলন করেও বড় বিনিয়োগ আনতে সক্ষম হয়নি রাজ্য সরকার৷ বরং রাজ্যে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ-সহ নানা ধরনের ছোট, বড় ও মাঝারি শিল্পেই বিনিয়োগ আসছে৷ তাই রাজ্য সরকার এ বার খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প নিয়ে সুমারিতে নামছে৷ কারা চালাবে এই সুমারি, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে যোগ্যদের দায়িত্ব দিতে বিজ্ঞাপন দিয়ে 'ইচ্ছাপত্র' চাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার৷

সমীক্ষকদের প্রধান কাজই হল, জেলা স্তরে সমীক্ষা চালিয়ে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের সংখ্যা, তারা বছরে কত টাকার ব্যবসা করেন, কত মানুষের জীবিকা এই সব শিল্পের ওপর নির্ভরশীল, উত্‍পাদনের পরিমাণ কেমন, রাজ্যের বাজারে, দেশেব বাজারে না বিশ্ব বাজারে ব্যবসা করে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা৷ রাজ্যে এ ধরনের শিল্পে বিনিয়োগের সম্ভাবনা থাকলেও কোনও তথ্য ভাণ্ডারই নেই৷ আগামী দিনে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পকে সামনে রেখেই বিনিয়োগ টানায় গুরুত্ব দিতেই তড়িঘড়ি এই সমীক্ষার কাজে হাত দেওয়ার সিদ্ধান্ত৷ চিন-সহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশ কয়েকটি রাজ্য ইতিমধ্যেই এ ক্ষেত্রে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখাচ্ছে৷

রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যান পালন দপ্তরের অধিকর্তা জয়ন্ত আইকত বলেন, 'যে সমস্ত খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প বছরে ১২ থেকে ২৪ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ব্যবসা করে তাদের রাজ্য ফুড সেফটি কমিশন থেকে লাইসেন্স নিতে হয়৷ বর্তমানে রাজ্যের মাত্র ২৩০০ কারখানার এ ধরনের লাইসেন্স রয়েছে৷ যে সমস্ত শিল্প সংস্থা বছরে ২৪ লক্ষ টাকা বা তার বেশি টাকার ব্যবসা করে তাদের কেন্দ্রীয় সরকারের লাইসেন্স নিতে হয়৷ রাজ্যে এ ধরনের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের সংখ্যা রয়েছে ৪৮টি৷' তাঁর কথায় এই তথ্যের যথেষ্ট বাস্তবতা নেই৷ বহু কারখানা এ ধরনের লাইসেন্স না নিয়েই চলছে৷ এদের সঠিক সংখ্যা নির্ধারণ, উত্‍পাদনের সঠিক পরিমাণ নির্ধারণেই সুমারির প্রয়োজন৷ এ রাজ্যে কাজু উত্‍পাদন হয়৷ একে ঘিরে নানা রকম শিল্প তৈরি হয়েছে৷ বিদেশের বাজারে বা অন্যান্য রাজ্যের বাজারেও যাচ্ছে৷ কিন্ত্ত এ নিয়ে কোনও সঠিক তথা সরকারের হাতে নেই৷

কিন্ত্ত বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে কেন, রাজ্য ফুড সেফটি কমিশন কি সমীক্ষার জন্য যথেষ্ট নয়?

খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও খাদ্য দপ্তরের কর্তাদের মতে, পরিকাঠামোর সমস্যা রয়েছে৷ জেলা ফুড সেফটির বিষয়টি দেখেন ডেপুটি সিএমওএইচ ও তাঁর দপ্তরের আধিকারিকরা৷ প্রতিটি জেলাতেই তাদের লোকাভাব রয়েছে৷ পর্যাপ্ত গবেষণাগার নেই৷ তাই ভেজাল পরীক্ষার কাজটাই হয় না৷ অথচ জেলা শিল্প কেন্দ্রগুলিতে খোঁজ নিলেই জেলার কোথায় খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প রয়েছে তার একটা আভাস পাওয়া যেতে পারে৷ পুরসভার ট্রেড লাইসেন্স দপ্তর বা বিক্রয় কর দপ্তরে খোঁজ নিলেও তথ্য পাওয়া যেতে পারে৷ তাই ফুড সেফটি কমিশন থেকেও নেই৷

রাজ্য খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যান পালন দপ্তরের অধিকর্তার কথায়, 'কাজটা বিশাল, তাই যাদের এই কাজে নিয়োগ করা হবে তদের ক্ষমতা আগে যাচাই করে নিতে চায় সরকার৷ আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়ে 'ইচ্ছাপত্র' চাওয়া হবে৷ কাজ শুরুর তিন মাসের মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন রিপোর্ট চাওয়া হবে৷'


নেই বেতন বৃদ্ধির নির্দেশিকা, মামলার পথে বহু শিক্ষক

0
0

saberee.g@timesgroup.com

এমফিল, পিএইচ ডি ডিগ্রিধারী শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নির্দিষ্ট নিয়ম আছে৷ কিন্ত্ত সে সংক্রান্ত নির্দেশিকাই গত পাঁচ বছরে বের করতে পারেনি রাজ্য সরকার৷ যার জেরে অনেক শিক্ষক বঞ্চিত হয়েছেন তাঁদের হকের পাওনা থেকে৷ এ জন্য সরকারের বিরুদ্ধে মামলার পথ ধরেছেন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শ'খানেকেরও বেশি শিক্ষক৷ মামলার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই৷

এর আগে ২০০৬-এর পে কমিশনের সুপারিশ মেনে বর্ধিত বেতনের বকেয়া টাকা পেতেও মামলা করেছিলেন একদল শিক্ষক৷ সেই মামলা চালাতে নেপথ্যে থেকে সহায়তা করেছিল পশ্চিমবঙ্গ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (ওয়েবকুটা)৷ এমফিল, পিএইচডি নির্দেশিকা সংক্রান্ত মামলাতেও তারা একই ভূমিকা নেবে বলে সংগঠন সূত্রের খবর৷ যদিও সংগঠনগত ভাবে মামলা করা হচ্ছে না৷

২০০৬-এর ইউজিসি-র পে কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, যে শিক্ষক এমফিল বা পিএইচডি ডিগ্রি নিয়ে শিক্ষকতায় ঢুকছেন বা চাকরিতে ঢোকার পরে ডিগ্রিগুলি আর্জন করছেন, তাঁদের তিনটি এবং পাঁচটি অগ্রিম বেতনবৃদ্ধি হবে৷ মূল বেতন বা বেসিক পে-এর উপরে নির্দিষ্ট হারে এই বৃদ্ধি হলেও এর ফলে বেতনের অন্যান্য অংশ মিলিয়ে টাকার অঙ্কটা বেশ ভাল একটা জায়গাতেই পৌঁছনোর কথা বলে জানাচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা৷ কিন্ত্ত সে কথা তো রাখা হয়ইনি, উল্টে পে কমিশনের যাবতীয় সুপারিশ পূরণ করার শর্তে কেন্দ্রের কাছ থেকে বর্ধিত বেতনের জন্য টাকা নিয়ে রাজ্য প্রতারণা করেছে বলেও শিক্ষকদের অভিযোগ৷

ওয়েবকুটা-র এক নেতা বলেন, 'এমনিতেই ইউজিসি-র নিয়মে এখন পদোন্নতি, বেতনবৃদ্ধি অনেক কঠিন৷ আগে কোনও সেমিনারে যোগ দিলেই নম্বর মিলত, এখন পেপার পড়া বাধ্যতামূলক৷ আগে যে কোনও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন জার্নালে পেপার প্রকাশিত হলে নম্বর মিলত, এখন জার্নালের বিচারও অনেক কঠিন ভাবে করা হয়৷ তার উপরে রাজ্য সরকারও নির্দেশিকা বের না করায় আমরা আমাদের হকের পাওনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি৷' এসইউসিআই বিধায়ক তথা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তরুণ নস্কর বলেন, 'শিক্ষকদের উত্‍সাহ দিতেই বেতনবৃদ্ধির নির্দেশিকা জারি হবে বলে জানিয়েছিল সরকার৷ কিন্ত্ত তা আর হল না৷' সরকারি কলেজ শিক্ষক সমিতির নেতা দেবাশিস সরকারও একই কথা জানিয়েছেন৷

কিন্ত্ত নির্দেশিকা জারি করা হল না কেন?

এ নিয়ে কথা বলার জন্য বারবার টেলিফোন করেও শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি৷ জবাব মেলেনি এসএমএস-এর৷ তবে বিকাশ ভবনের এক আধিকারিকের ব্যাখ্যা, 'যে নিয়মে বেতনবৃদ্ধি হওয়ার কথা, তাতে এমফিল, পিএইচ ডি ডিগ্রিধারী কোনও অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসরের বেতন প্রফেসরের চেয়ে বেশি হয়ে যেতে পারে৷ সে ক্ষেত্রে আবার মামলা, অসন্তোষের আশঙ্কা৷ বিষয়টি নিয়ে ইউজিসি-র সঙ্গে যোগাযোগও করা হয়েছিল৷ ইউজিসি অবশ্য বেতন বৃদ্ধির পক্ষেই সওয়াল করেছে৷' বিষয়টি আপাতত অর্থ দপ্তরের বিবেচনাধীন৷ তার আগেই অবশ্য আদালতে উঠতে চলেছে এ সংক্রান্ত মামলা৷

শুধু বাতিস্তম্ভে সান্ত্বনা ক্ষুব্ধ কামদুনিকে

0
0

প্রশান্ত ঘোষ ■ কামদুনি

মাত্র তিন দিন পরেই কামদুনিতে ধর্ষণের ঘটনায় রায় চলেছে আদালত৷ তার আগে ক্রমাগত সমালোচনা অভিযোগের প্রেক্ষিতে ক্ষতে প্রলেপ দেওয়ার জন্য স্ট্রিট লাইট বসানোর কাজ শুরু হল কামদুনিতে৷ মোট পথের অর্ধেকেরও কম পথে এটা বসানো সম্ভব কিন্ত্ত রাস্তায় আলো জ্বললেও ভাঙা রাস্তা কবে ঠিক , সে ব্যাপারে কেউই কোন আশ্বাসবাণী শোনাতে না৷ তাঁরা অন্য কোন সুবিধা পাবেন কি না , সে যথেষ্ট সন্দিহান বাসিন্দারা | সব মিলিয়ে চাপা আর না -পাওয়ার যন্ত্রণা কামদুনিবাসীর চোখ -মুখে৷ রাজারহাট ২১১ মেন রোড থেকে কামদুনি গ্রামেরূরত্ব দেড় কিমিরও বেশি৷ কামদুনি মোড় থেকে সেই পাঁচিল ঘেরা জায়গা পেরিয়ে দু'পাশের নির্জন মাঝখান দিয়ে সরু ভাঙাচোরা রাস্তাটি গ্রামেুকেছে৷ এই রাস্তায় আগে কোনও বিদ্যুত্‍‌ এর খুঁটি ছিল না৷ সেই ভয়ঙ্কর ঘটনার পর এই রাস্তার পাশ দিয়ে লাইন বসিয়ে নতুন করে বিদ্যুত্ সংযোগ হয় কামদুনি গ্রামে৷

আড়াই বছর আগেই কামদুনির আলো জ্বালানোর প্রতিশ্রীতি দিয়েছিলেন নেতা -মন্ত্রীরা৷ সেই প্রতিশ্রীতির বাস্তবায়ন ৭৫০ মিটার রাস্তায় পোলের মাধ্যমে এলইডি বসানোর কাজ শুরু করেছে বারাসত ২ ব্লক৷ ব্লকূত্রে জানা গিয়েছে , কামদুনির রাস্তা আলোকিত করতে সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার তাঁর সাংসদ থেকে তিন লক্ষ টাকা দান করেছেন৷ সেই টাকায় ৭৫০ মিটার রাস্তা জুড়ে ২৫টি পোলে ৪৮ ওয়াটের আলো লাগানোর কাজ শুরু হয়েছে তড়িঘড়ি৷ শনিবার এলাকায় গিয়ে দেখা গেল , ব্লকের এক ইঞ্জিনিয়ারের তত্ত্বাবধানে তড়িঘড়ি সেই কাজ করছেন ঠিকাকর্মী আনসারুজ্জামান৷ বাকি রাস্তায় কবে আলো বসবে বা আদৌ বসবে কি না , তা বলতে পারলেন না আধিকারিকরা৷ প্রায় পাঁচ বছর আগে কামদুনির ওপর দিয়ে রাজারহাট -বারাসত সংযোগকারী একটি রাস্তা তৈরি করেছিল উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদ৷ ২০১৩ সালের জুন মাসে সেই ভয়ঙ্কর ঘটনার পর একবার রাস্তা মেরামত হয়েছিল৷ কিন্ত্ত বছর ঘোরার আগেই সেই রাস্তা ভেঙে যায়৷ ওই রাস্তা দিয়ে রাজারহাট -বারাসত রুটের টাটা ম্যাজিক গাড়ি চলাচল করে৷ এলাকাবাসীর অভিযোগ , রাস্তা এতটাই খারাপ যে, কিছু দিন আগে ম্যাজিকের ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে এক ব্যক্তি মারা যান৷

নিহত কলেজ ছাত্রীর প্রতিবেশী অমিতা ঘোষ বলেন , 'রাস্তা , বিদ্যুত্‍‌ সবই আগে ছিল৷ নতুন করে আমরা কিছুই পাইনি৷ ' ব্লক সূত্রের খবর , শনিবার এলাকার উন্নয়ন নিয়ে জেলাশাসক মনমিত নন্দার সঙ্গে বৈঠক করেন বারাসত ২ ব্লকের বিডিও অসীমকুমার ঘড়ুই৷ সেখানে কামদুনির বেহাল রাস্তার প্রসঙ্গ ওঠে৷ বিডিও জানালেন , 'ওই রাস্তাটি জেলা পরিষদের তহবিল থেকে নির্মিত হয়েছিল৷ রক্ষণাবেক্ষণের গ্যারান্টি পিরিয়ড শেষ হয়েছে৷ নতুন করে বরাদ্দের জন্য আমরা ডিএমকে অনুরোধ করব৷ 'সিপিএম নেতা শৌভিক প্রামাণিকের দাবি , '২৮ তারিখের রায় নিয়ে শাসকদল চাপে আছে৷ তার উপর সামনে বিধানসভা ভোট৷ তাই এখন লোকদেখানো কিছু কাজ হবে৷ আদতে কামদুনি যে অন্ধকারে ছিল , সেখানেই আছে৷ ' যদিও এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বারাসত ২ পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সভাপতি ইফতিকারউদ্দিন বলেন , '২৮ তারিখের রায়ের সঙ্গে ওখানে উন্নয়নের কোনও সম্পর্ক নেই৷ আমরা সারা বছর আমাদের ব্লকে রাস্তাঘাট , পানীয় , বিদ্যুত্-সহ নানা বিষয়ে উন্নয়নমূলক কাজ করে থাকি৷ 'বাতিস্তম্ভ বসানোর কাজ চলছে৷ আর কোনও পরিষেবা তাঁরা পাননি , অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের --- প্রতিবেদককামদুনি মোড় থেকে সেই অভিশন্ত পাঁচিল ঘেরা জায়গা পেরিয়ে দু'পাশের নির্জন ভেড়ির মাঝখান দিয়ে সরু ভাঙাচোরা রাস্তাটি গ্রামে ঢুকেছে৷ এই রাস্তায় আগে কোনও বিদ্যুতের খুঁটি ছিল না৷ কিন্ত্ত সেই ভয়ঙ্কর ঘটনার পর এই রাস্তার পাশ দিয়ে হাইটেনশন লাইন বসিয়ে নতুন করে বিদ্যুত্ সংযোগ দেওয়া হয় কামদুনি গ্রামে৷ আড়াই বছর আগেই কামদুনির রাস্তায় আলো জ্বালানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীরা।সারাই হয়নি ভাঙা রাস্তা , রায় ঘোষণার আগে ক্ষোভে ফুঁসছেন বাসিন্দারা৷

কচ্ছপের মড়কে বিধায়কের তোপ বন দপ্তরের বিরুদ্ধে

0
0

দেবাশিস দাশগুপ্ত

পূর্বস্থলীর চুপি চরে কয়েকশো কচ্ছপের মৃত্যুতে বন দপ্তরের উদাসীনতাই সামনে আসছে৷ নজরদারির অভাবের অভিযোগ তুলছেন স্থানীয় বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়ই৷ জলের পরিবেশ ও কচ্ছপের প্রজাতি খতিয়ে না দেখে কচ্ছপগুলিতে সেখানে ছাড়া হয়েছিল বলে মনে করছেন বিশের্ষরা৷ খবরটি 'এই সময় '-এ প্রকাশিত হতেই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন৷ রবিবারই কাটোয়া থেকে চুপি চরে যান বন দপ্তরের রেঞ্জ অফিসার সুকুমার সরকার৷ পরিস্থিতি ঘুরে দেখেন পূর্বস্থলীর বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়ও৷ কচ্ছপের প্রচুর দেহ ভাসতে দেখে উত্তেজিত তপন 'এই সময় '-কে বলেন , 'এ তো সাংঘাতিক ব্যাপার৷ প্রচুর কচ্ছপ মরে ভাসছে৷ আমিই অন্তত ১৭৫ -১৮০টির মতো গুনেছি৷ পুরো বিল জুড়েই পড়ে রয়েছে দেহ৷ বন দন্তর আমাদের কিছু জানায় না৷ কিছু করেও না৷ ' বন দপ্তরের কর্মীরা এ দিন মৃত কচ্ছপগুলিকে তোলার চেষ্টা করেন৷ কিন্ত্ত নৌকা না পাওয়ায় সে কাজও সম্ভব হয়নি৷ সোমবার মরা কচ্ছপগুলি তোলা হবে বলে রেঞ্জ অফিসার জানিয়েছেন৷ রেলপুলিশ কচ্ছপগুলি বাজেয়ান্ত করেছিল বলে শনিবারই বন দন্তর জানিয়েছিল৷

দিন কয়েক আগে বাজেয়াপ্ত করা সেই প্রায় হাজারখানেক কচ্ছপ ছাড়া হয়েছিল চুপি চরের জলাশয়ে৷ তারপর আর বন দপ্তরের নজরদারি ছিল না বলে স্থানীয় মাঝিদের অভিযোগ৷ পর্যটকদের পাখি দেখাতে নিয়ে যাওয়া মাঝিরা প্রতিদিনই মরা কচ্ছপ ভেসে উঠতে দেখছেন৷ দুর্গন্ধে ভরে গিয়েছে জলাশয়টি৷ এ দিনও কচ্ছপ মারা গিয়েছে বলে দাবি চুপিতে পর্যটকদের পাখি দেখিয়ে উপার্জনকারী মাঝিদের৷ মজবুল শেখ নামে এক মাঝি বলেন , 'সকালে সরকারের লোক এসেছিল৷ আমাদের নৌকা নিয়ে কচ্ছপ তুলবে বলেছিল৷ কিন্ত্ত পর্যটকদের জন্য সব নৌকা আগেই বুক করা থাকায় আমরা বলি , আজ দিতে পারব না৷ কাল আবার আসবে জানিয়েছে৷ ' বর্ধমানের বিভাগীয় বনাধিকারিক অজয় দাস বলেন , 'আমাদের স্টাফেরা গিয়েছেন৷ এখনও কোনও খবর পাইনি৷ ওরা বিষয়টি দেখছেন৷ ' কিন্ত্ত কেন মারা যাচ্ছে কচ্ছপগুলি৷ বনাধিকারিক বলেন , 'প্রকৃতিতে কোনও সমস্যা হতে পারে৷

সব সময় তো এমন হয় না৷ ' কিন্ত্ত বিষয়টিতে বন দপ্তরের চূড়ান্ত গাফিলতির ইঙ্গিত রয়েছে সুন্দরবন ও বক্সা টাইগার রিজার্ভের প্রাক্তন ক্ষেত্র অধিকর্তা ও বিশিষ্ট বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ প্রণবেশ সান্যালের কথায়৷ কচ্ছপ মৃত্যুর সম্ভাব্য কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন , 'দু'ধরনের কচ্ছপ হয়৷ জলের কচ্ছপ ও ডাঙার কচ্ছপ৷ ডাঙার কচ্ছপ জলে ছাড়লে মরে যেতে পারে৷ ওরা ভালো সাঁতারু হয় না৷ এ ছাড়া ওখানে জলে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ কমে গিয়ে বিপত্তি ঘটে থাকতে পারে৷ ' চুপি চরে কচুরিপানা রয়েছে জানিয়ে প্রণবেশবাবু বলেন , 'কচুরিপানা মরে গেলে অক্সিজেন বেশি টেনে নেয়৷ ওখানে সেরকম কিছু নিশ্চয় ঘটেছে৷ না হলে এমন হতে পারে না৷ ' চুপিতে পাখি দেখতে যাওয়া একটি প্রকৃতিপ্রেমী সংস্থার সদস্য দেবদুলাল চন্দ্র বলেন , 'প্রশাসন ও বন দন্তরের এ বার নিশ্চয়ই টনক নড়বে৷ বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে প্রাণীরা অবহেলায় মারা পড়বে , এটা কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না৷ 'এই সময় ' পরিবশে বান্ধব ভূমিকা নেওয়ায় আমরা খুব খুশি৷ '

৫০টি ব্রোঞ্জ মূর্তি মিলল মোগলমারির খননে

0
0

এই সময় , দাঁতন : খননকার্য চালিয়ে এ যাবত্‍‌ সব চেয়ে উল্লেখযোগ্য সাফল্য মিলল মোগলমারির বৌদ্ধবিহারে৷ গত ১১ জানুয়ারি থেকে ফের শুরু হয়েছে খননের কাজ৷ রবিবার সেখানে উদ্ধার হয়েছে অন্তত ৫০টি ব্রোঞ্জের মূর্তি৷ রাজ্য পুরাতত্ত্ব দন্তরের তরফে মোগলমারিতে খননের দায়িত্বপ্রান্ত আধিকারিক প্রকাশচন্দ্র মাইতি এ দিন রাতে বলেন , 'এখনও উদ্ধার কাজ চলছে৷ আমরা অনেকগুলি বৌদ্ধ দেব -দেবীর মূর্তি পেয়েছি৷ এ ছাড়াও তারা , অবলোকিতেশ্বর , সরস্বতীর মূর্তিও পাওয়া গিয়েছে৷ ভোটিক বা নিবেদিত স্তুপেরও খোঁজ পাওয়া গিয়েছে৷ ' মূর্তিগুলির মাপ ১০ থেকে ৪৩ সেমি পর্যন্ত৷ ল্যাবরেটরিতে মূর্তিগুলি বিশ্লেষণ করে দেখা হবে বলে পুরাতত্ত্ব দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে৷ পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতনে ষষ্ঠ শতকের ওই বৌদ্ধবিহার আবিষ্কার ভারতীয় প্রত্নতত্ত্বের ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য ঘটনা বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা৷ প্রত্নতত্ত্ববিদদের মতে , গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতনের সময় কেন্দ্রীয় শক্তি দুর্বল হয়ে পড়লে শক্তিশালী হয়ে ওঠেন স্থানীয় জমিদাররা৷ তখনই বাংলার এই অংশে গড়ে উঠেছিল বিশাল বৌদ্ধবিহারটি৷

মোগলমারির বৌদ্ধবিহার পূর্ব ও উত্তর -পূর্ব ভারতে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলেই মত বিশেষজ্ঞদের৷ নতুন সহস্রাব্দের গোড়ার দিকে আবিষ্কৃত ওই বৌদ্ধবিহারে ২০১৩ থেকে রাজ্য পুরাতত্ত্ব বিভাগ খননের কাজ চালাচ্ছে৷ এ বার তৃতীয় পর্যায়ের খনন শুরু হতেই গুরুত্বপূর্ণ স্মারক উদ্ধার হওয়ায় উসিত প্রত্নতত্ত্ববিদরা৷ তবে পুরাতত্ত্ব বিভাগের তরফে উদ্ধার হওয়া সামগ্রী সম্পর্কে গোপনীয়তা অবলম্বন করা হচ্ছে৷ এ বিষয়ে স্থানীয় তরুণ সেবা সংঘ পাঠাগারের যুগ্ম সম্পাদক অতনু প্রধান বলেন , 'অনেকগুলি ছোট ছোট মূর্তি উদ্ধার করা হয়েছে বলে শুনেছি৷ তবে আমাদের একটি মাত্র মূর্তি দেখানো হয়েছে৷ ' মোগলমারি বৌদ্ধবিহারের একটি বড় অংশই ওই পাঠাগারের জমির মধ্যে রয়েছে৷ গ্রামটির নীচেই বৌদ্ধবিহারটির অবস্থান বলে স্থানীয় বাসিন্দাদেরও দাবি৷ প্রাথমিক ভাবে গ্রামের বাসিন্দারা বেশ কিছু প্রাচীন সামগ্রীর হদিস পান৷ সেগুলি সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে তরুণ সেবা সংঘ পাঠাগারে৷

সংগৃহীত সামগ্রীর একটি রেজিস্ট্রারও ক্লাবকর্তারা তৈরি করেছেন৷ উত্‍‌সাহী মানুষ সেগুলি দেখতেও যান৷ ক্লাব কর্তা অতনু বলেন , 'মূর্তিগুলি উদ্ধার হওয়ায় আমরা খুব খুশি৷ রাজ্য সরকার অবিলম্বে মোগলমারিতে একটি জাদুঘর তৈরি করে উদ্ধার হওয়া প্রত্নসামগ্রীগুলি জনসাধারণকে দেখানোর ব্যবস্থা করুক৷ ' রবিবারই পূর্ণিমা তিথিতে মোগলমারিতে শুরু হয়েছে বৌদ্ধ উত্‍‌সব৷ স্থানীয় মোগলমারি বৌদ্ধ অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে এলাকার ঐতিহাসিক গুরুত্বকে সামনে তুলে ধরতেই এই অনষ্ঠান বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা৷ ২৪ -২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত তিন দিন ধরে চলবে উত্সব৷ মোগলমারিতে উদ্ধার হওয়া প্রত্নসামগ্রীর কিছু নিদর্শন ও প্রচুর ছবি দর্শকদের সামনে হাজির করা হয়েছে ওই মেলায়৷ সেখানে মোগলমারি নিয়ে চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষের তৈরি একটি তথ্যচিত্রও প্রদর্শিত হবে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা৷

ফাঁসির পুনর্বিচার চেয়ে স্বাক্ষর সংগ্রহ ছাতনায়

0
0

রাজেন্দ্রনাথ বাগ ■ ছাতনা

দুঃখকে ছাপিয়ে গিয়েছিল ক্ষোভ৷ মনে দলা পাকাত অগুনতি প্রশ্ন৷ কিন্ত্ত ভাষা পেত না৷ রবিবার দুপুরে এক যুগের অব্যক্ত যন্ত্রণা বাঁধ ভাঙল৷ শান্তি মুখোপাধ্যায় অনর্গল বলে গেলেন , 'আমারা গাঁয়ের গরিব৷ কলকাতার বড়লোকেদের মন রাখতে সরকার -পুলিশ আমার দাদাকে খুন করেছে৷ পুলিশ বাড়িতে এসে অত্যাচার করেছে৷ ছোট ভাই , বুড়ো বাবাকেও রেহাই দেয়নি৷ আমরা সর্বস্বান্ত হয়েছি৷ কলকাতা থেকে আসা পুলিশ অফিসার প্রসূন মুখোপাধ্যায় আমাকে শাসিয়েছিল , এ বার তোকে তুলে নিয়ে গিয়ে বোঝাব হেতালের সঙ্গে কী হয়েছিল !' শান্তিদেবী ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের বোন৷ ভবানীপুরের স্কুল -কিশোরী হেতাল পারেখকে ধর্ষণ -খুনের অভিযোগে ১৯৯০ -এর মে মাসে ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেপ্তারের আগে থেকে ২০০৪ -এর ১৪ অগস্ট কাকভোরে তাঁকে ফাঁসিতে ঝোলানো অবধি দিনগুলোর কথা বলতে গিয়ে বার বার ডুকরে উঠছিলেন শান্তি৷ দাদার বদনামে বিয়ে বন্ধ হয়েছিল৷ অনেক কষ্টে পরে বিয়ে হয়৷ নিরপরাধ দাদাকে অন্যায় ভাবে শাস্তি দেওয়া হয়েছে --এ নিয়ে নিশ্চিত থেকেছেন বরাবরই৷

ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিক্যাল ইনস্টিটিউটের দুই অধ্যাপক প্রবাল চৌধুরী ও দেবাশিস সেনগুপ্তের সম্প্রতি প্রকাশিত গবেষণা -প্রতিবেদন শান্তি , তাঁর ভাই বিকাশের বিশ্বাস -ধারণাগুলোকে যুক্তির শক্ত জমি দিয়েছে৷ যে ভিতের উপর দাঁড়িয়েই রবিবার বাঁকুড়ার ছাতনায় ধনঞ্জয়দের গ্রামের অদূরে কামারকুলি মোড়ে এক সভায় চা -দোকানি দেবদুলাল মুখোপাধ্যায় কয়েকশো মানুষের জমায়েতকে চমকে দিয়ে বললেন , 'থানার সামনে চায়ের দোকান৷ এক দিন সকালে থানায় চা দিতে গিয়ে দেখি , ধনঞ্জয় বসে৷ ওকে কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই কলকাতা থেকে আসা এক পুলিশ অফিসার বলেন , ওকে চিনিস ? হ্যাঁ বলতেই কয়েকটা সাদা কাগজে সই করিয়ে নিলেন৷ পরে লালবাজারে নিয়ে গিয়ে শেখানো হয় , বলবি , তোর সামনে ধনঞ্জয়কে ধরা হয়েছে ওদের বাড়ি থেকে , আর চোরাই ঘড়ি উদ্ধার হয়েছে৷ সত্যি হল , এ সবের আমি কিছুই জানি না৷ ' ধনঞ্জয়ের বিরুদ্ধে ধর্ষণ -খুনের চার্জ প্রতিষ্ঠায় হেতালদের বাড়ি থেকে ওই ঘড়ি চুরির অভিযোগই ছিল পুলিশের হাতিয়ার৷ তাতে ঘটনাস্থলে ধনঞ্জয়ের উপস্থিতি প্রমাণ হয়৷

এত দিন পর সেই চোরাই ঘড়ি 'উদ্ধারে 'র একমাত্র সাক্ষী যা বললেন , তাতে পুলিশের কেস গোড়াতেই বাতিল হয়ে যায় ! স্থানীয় বাম -কর্মী নির্মল দত্ত ক্ষোভ উগরে দিলেন এককালে নিজেদের সরকারেরই প্রধান মুখ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ও তাঁর স্ত্রী মীরাদেবীর প্রতি৷ নির্মলের কথায় , 'ধনঞ্জয় আমার সহপাঠী ছিল৷ ওর নামে মিথ্যে কলঙ্ক লেপা হয়েছে৷ মীরাদেবী ওর ফাঁসির দাবিতে পথে নেমেছিলেন৷ আর কখনও কোনও অন্যায়ের প্রতিবাদে ওঁকে দেখা গেল না কেন ?' মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর আয়োজিত এ দিনের সভা থেকেই দাবি উঠল , ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করুক সরকার৷ প্রবালবাবু-দেবাশিসবাবুরা মনে করালেন , তদন্ত করে পুলিশ -প্রশাসন৷ ফাঁসির সাজাও কার্যকর করে তারাই৷ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ধনঞ্জয় মামলার পুনর্তদন্ত -পুনর্বিচার চেয়ে এ দিন থেকেই স্বাক্ষর সংগ্রহ শুরু করল ছাতনা নাগরিক সমিতি৷



Viewing all 41318 articles
Browse latest View live