Quantcast
Channel: Eisamay
Viewing all 41318 articles
Browse latest View live

মরিয়া মোর্চা এবার আমরণ অনশনের পথে

$
0
0

এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: মুখ্যমন্ত্রীর আলোচনায় বসার প্রস্তাবকে উপেক্ষা করে, এখনও বন্‌ধের পথেই অনড় পাহাড়। পৃথক রাজ্যের দাবিতে সরকারের উপর আরও চাপ বাড়াতে ​ গোর্খাল্যান্ড আন্দোলন সমন্বয়ক কমিটির ডাকে আগামী ১৫ জুলাই থেকে আমরণ অনশন শুরু হচ্ছে।

পাহাড়ে হিংসার ঘটনায় কমিটির তরফে এদিন সিবিআই তদন্তও দাবি করা হয়েছে। দার্জিলিঙে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আসা বন্ধ হওয়ায়, ১৪ জুলাই জেলাশাসক ও মহাকুমা শাসকদের দফতর ঘেরাওয়েরও কর্মসূচি নিয়ে পাহাড়ের সর্বদলীয় কমিটি।

মঙ্গলবার মিরিকে সর্বদল বৈঠকের পর গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রধান বিমল গুরুং সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে জানান, দার্জিলিঙে অনির্দিষ্টকালের বন্‌ধ চলবে। সেইসঙ্গে পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে ১৫ জুলাই থেকে অনশনও শুরু হচ্ছে।

গুরুং এদিন জানিয়েছন, সর্বদলের সিদ্ধান্ত ক্রমে পাহাড়ের বিভিন্ন ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানদের আগামী ১৪ জুলাই সন্ধে ৬টার মধ্যে পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধে প্রতীকী প্রতিবাদ স্বরূপ ১৩ জুলাই যাবতীয় পুরস্কারও ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিটি।

পাহাড়ে আন্দোলনে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার একক কর্তৃত্ব খর্ব করতে গত ২৯ জুন গঠিত হয় গোর্খাল্যান্ড মুভমেন্ট কো-অর্ডিনেশন কমিটি। পাহাড়ের সবক'টি দল শামিল হয় ওই কমিটিতে।


শান্তির আশ্বাস মমতার, হুঙ্কার পাহাড়ে

$
0
0

তাপস প্রামাণিক ■ দিঘা
সঞ্জয় চক্রবর্তী ■ মিরিক

মুখ্যমন্ত্রী যেদিন বললেন , পাহাড়ে অচিরেই শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে , সেদিনই পৃথক রাজ্যের দাবিতে দার্জিলিঙের চৌরাস্তায় আমরণ অনশনে বসার হুমকি দিল পাহাড়ের রাজনৈতিক দলগুলি৷ মঙ্গলবার বিকেলে দিঘায় সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যাঁরা আগুন নিয়ে খেলছেন তাঁদের বলব , হিংসা ছেড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করুন৷ হিংসা হচ্ছে দূষণ৷ শান্তি হচ্ছে ভূষণ৷ ভায়োলেন্স ইজ দ্য পলিউশন অ্যান্ড পিস ইজ দ্য সলিউশন৷’

অন্য দিকে , মিরিক ট্যুরিস্ট লজে আয়োজিত গোর্খাল্যান্ড মুভমেন্ট কোঅর্ডিনেশন কমিটির (জিএমসিসি ) সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে , ১৫ জুলাই থেকে আমরণ অনশন শুরু হবে৷ জিএমসিসি ’তে সামিল পাহাড়ের ১৬টি রাজনৈতিক দলেরই সাধারণ সম্পাদক কিংবা সহ -সম্পাদক পদমর্যাদার নেতাকে ওই অনশনে সামিল হতে হবে৷ হুমকি দেওয়া হয়েছে পাহাড়ের জনজাতিদের উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান , ভাইস চেয়ারম্যান এবং সদস্য সচিবদেরও৷ আগামী ১৪ জুলাই সন্ধ্যায় ৬টার মধ্যে তাঁদের পদত্যাগপত্র জমা দিতে হবে৷ না -হলে তাঁদের ‘গোর্খা-বিরোধী ’ বলে ঘোষণা করা হবে৷ মঙ্গলবারই হাইকোর্টের ভারপ্রান্ত প্রধান বিচারপতি নিশীথা মাত্রে ও বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ জানায় , পাহাড়ে শান্তি ফেরাতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা আগামী শুক্রবারের মধ্যে হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে রাজ্যকে৷

মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানা গিয়েছে , অশান্ত পাহাড়কে স্বাভাবিক করতে তিনি খুব শীঘ্রই বড়সড় কোনও সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে পারেন৷ তারই অঙ্গ হিসাবে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা-সহ পাহাড়ের বিবদমান দলগুলির সঙ্গে আলোচনার দরজা খুলে রাখতে চান৷ গত কয়েক মাস ধরেই মুখ্যমন্ত্রী যেখানেই অনুষ্ঠান করতে গিয়েছেন , নিয়ম করে মোদী সরকারকে আক্রমণ শানিয়েছেন৷ দার্জিলিংয়ে অশান্তির জন্যও কেন্দ্রের বিরুদ্ধেই ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনেছেন মমতা৷ নাম না -করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর কটাক্ষ , ‘বিদেশে সব ঘুরে বেড়াচ্ছে৷ পর ভোলানো আর ঘর জ্বালানো৷ বাইরে গিয়ে বাতি দিচ্ছে৷ আর নিজের রাজ্যে লোকগুলোকে মেরে দেওয়ার চেষ্টা করছে৷ দার্জিলিংও এরাই জ্বালিয়েছে৷ আমরা দার্জিলিংকে জ্বলতে দেব না৷ কেন্দ্রের চক্রান্তে বশ্যতা স্বীকার করব না৷ ’

কেন্দ্রকে তোপ দেগে মমতা জানান , বাংলা সব দিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে৷ বাংলা সবুজ সাথীতে এক নম্বর৷ কন্যাশ্রীতে এক নম্বর৷ স্কিল ডেভেলপমেন্টে এক নম্বর৷ ক্ষুদ্র শিল্পে এক নম্বর৷ তাঁর কথায় , ‘বাংলা এগিয়ে যাচ্ছে বলেই কয়েকটা হিংসুটে লোকের আমাদের দেখে হিংসে করছে৷ হিংসার কোনও মেডিসিন নেই৷ কিছু কুচুটে লোক আছে৷ তারা কোনও কাজ কর না৷ শুধু হিংসা করে বেড়ায় কৈকেয়ী আর মন্থরার মতো৷ ’ রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের সর্বধর্ম সমন্বয়ের নীতি , স্বামী বিবেকানন্দ , রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর , কাজী নজরুল ইসলাম এবং মাতঙ্গিনী হাজরার আদর্শ এবং আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করিয়ে রাজ্যবাসীর প্রতি তাঁর আর্জি, ‘কোনও কুত্সায় কান দেবেন না৷ অপপ্রচারে কান দেবেন না৷ বাংলা মানবিক৷ দানবিক নয়৷ ’বিদেশে সব ঘুরে বেড়াচ্ছে৷ পর ভোলানো আর ঘর জ্বালানো৷ বাইরে গিয়ে বাতি দিচ্ছে৷ আর নিজের রাজ্যে লোকগুলোকে মেরে দেওয়ার চেষ্টা করছে৷ দার্জিলিংও এরাই জ্বালিয়েছে৷ আমরা দার্জিলিংকে জ্বলতে দেব না৷ কেন্দ্রের চক্রান্তে বশ্যতা স্বীকার করব নামমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷

নেই পুলিশ, বনধেই অনড় পাহাড়

$
0
0

সঞ্জয় চক্রবর্তী ■ মিরিক
সুনসান রাস্তায় অঝোরে বৃষ্টি৷ জলের তীব্র স্রোত রাস্তা পেরিয়ে গিয়ে পড়ছে নালায়৷ মিরিকে সর্বদল বৈঠকে যাওয়ার পথে সুকনা , রোহিণী মোড় পেরিয়ে সবেই গাড়িধুরায় পৌঁছতেই দেখা গেল রাস্তার উপরে ফেলে রাখা জ্বলন্ত টায়ার৷ পড়ে আছে বড় বড় পাথর৷ গাড়ি ঘোরানোর চেষ্টা করতেই , রাস্তার পাশের বন্ধ দোকানের চালার নীচে একদল যুবক বেরিয়ে এল৷ বৃষ্টির মধ্যে লক্ষ করার চেষ্টা করছে , গাড়ির সওয়ারির পরিচয়৷ প্রেস স্টিকার থাকায় ঝামেলাটা বেশিদূর গড়াল না৷

ঘটনাস্থলের মাত্র ৫০ মিটারের মধ্যে গাড়িধুরা আউটপোস্ট৷ এ ভাবে রাস্তা আটকে রাখলেও পুলিশ কিছু বলছে না ? মিরিক পৌঁছনোর গোটা রাস্তায় পুলিশ বলে কিছু নেই৷ পুরোটাই মোর্চার কর্মীদের দখলে৷ মিরিকের পথে সেনা কনভয় চোখে পড়লেও এ সব নিয়ে তারা মাথা ঘামাচ্ছে না৷ মিরিক ট্যুরিস্ট লজে সর্বদল বৈঠক৷ কাছেই থানা৷ অথচ আশপাশে কোনও পুলিশ নেই৷ সর্বত্রই মোর্চার রাজত্ব৷ পাহাড়ে এই একচেটিয়া দাপটেই বন্ধ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল মোর্চা৷ পৃথক রাজ্যের দাবিতে দার্জিলিংয়ের চৌরাস্তায় আমরণ অনশনে বসার হুমকি দিল পাহাড়ের রাজনৈতিক দলগুলি৷

মঙ্গলবার গোর্খাল্যান্ড মুভমেন্ট কোঅর্ডিনেশন কমিটির (জিএমসিসি ) সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে , ১৫ জুলাই থেকে আমরণ অনশন শুরু হবে৷ জিএমসিসিতে সামিল পাহাড়ের ১৬টি রাজনৈতিক দলেরই সাধারণ সম্পাদক কিংবা সহ -সম্পাদক পদমর্যাদার নেতাকে ওই অনশনে সামিল হতে হবে৷ হুমকি দেওয়া হয়েছে পাহাড়ের জনজাতিদের উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান , ভাইস চেয়ারম্যান এবং সদস্য সচিবদেরও৷ ১৪ জুলাই সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে তাঁদের পদত্যাগপত্র জমা না -দিলে তাঁদের ‘গোর্খা-বিরোধী ’ বলে ঘোষণা করা হবে বলে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ এই ঘোষণার পরিণাম কী হতে পারে তা খোলসা করা না -হলেও , পাহাড়ে ফেরা যে তাঁদের পক্ষে কঠিন হয়ে দাঁড়াবে সেই ইঙ্গিত স্পষ্ট৷

মোর্চার সহকারী সম্পাদক বিনয় তামাং বলেন , ‘এখনও জনজাতি উন্নয়ন বোর্ডের কোনও চেয়ারম্যান , ভাইস চেয়ারম্যান কিংবা সদস্য সচিবই পদত্যাগ করেননি৷ ১৪ তারিখ সন্ধে ৬টা পর্যন্ত সময় দেওয়া হচ্ছে৷ তার মধ্যে পদত্যাগ না -করলে গোর্খা বিরোধী ঘোষণা করা হবে৷ তার পরিণাম কী হবে সেটা পরে জানানো হবে৷ ’ ১৩ জুলাই নেপালি কবি ভানুভক্তের জন্মদিনে পাহাড়ের লেখক , সাহিত্যিকরা রাজ্য সরকারের দেওয়া ভানুভক্ত পুরস্কার ফিরিয়ে দেবেন বলেও হুমকি দিয়েছে জিএমসিসি৷

প্রায় এক মাস ধরে লাগাতার বন্ধে অধিকাংশ গ্রামে এবং চা বাগানের বাসিন্দাদের ঘরে খাবার নেই৷ স্কুল -কলেজ বন্ধ৷ বাসিন্দারা চান , বন্ধ প্রত্যাহার করে আন্দোলন হোক৷ কিন্ত্ত মোর্চার আপত্তিতে এ দিনও বন্ধ প্রত্যাহার নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি৷ বরং মোর্চা এবং জিএনএলএফের পক্ষ থেকে যুক্তি দেওয়া হয়েছে , লাগাতার বন্ধের জেরেই দ্রুত ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে৷ জিএনএলএফের মুখপাত্র নীরজ জিম্বা বলেন , ‘কেন্দ্রের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ রাখছি৷ যোগাযোগ রাখছি এনডিএ শরিক দলগুলির সঙ্গেও৷ আশা করছি , ১৭ জুলাইয়ের মধ্যে কিছু একটা হবে৷ ’

পাহাড়ে যে খাদ্যসঙ্কটের ইঙ্গিত মিলেছে বিনয় তামাংয়ের কথায়৷ তিনি অভিযোগ করেছেন , ‘পুলিশ পাহাড়ে খাবার আসতে দিচ্ছে না৷ জিএসটি বিল দেখতে চেয়ে গাড়ি চালকদের আটকে দিচ্ছে৷ ’ ১৪ জুলাই জিএমসিসি পাহাড় ও সমতলের সমস্ত জেলাশাসক , মহকুমাশাসক এবং বিডিএ দফতরে ধর্না দেবে বলে জানিয়েছে৷ রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন , ‘পুলিশ কেন খাবারের গাড়ি আটকাবে ? ওরা বন্ধ তুলুক৷ তা হলে তো সব কিছুই স্বাভাবিক হয়ে যাবে৷ ’

৮ জুলাই সোনাদায় তাসি ভুটিয়ার মৃত্যু এবং তার পর দিন ৯ জুলাই দার্জিলিং চকবাজারে মৃত্যুর ঘটনা নিয়েও আদালতে যাওয়ার হুমকি দিয়েছে জিএমসিসি৷ ৯ জুলাইয়ের ঘটনায় এ দিন সিকিমের মণিপাল মেডিক্যাল কলেজে অশোক তামাং নামে আরও এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে৷ আজ , বুধবার অশোক তামাংয়ের মৃতদেহ নিয়ে দার্জিলিঙে মিছিল করবে জিএমসিসি৷

পাহাড়ে কেন্দ্র-রাজ্য তরজায় ক্রুদ্ধ হাইকোর্ট

$
0
0

এই সময় : পাহাড় নিয়ে রাজনৈতিক কাজিয়া সংক্রান্ত আমজনতার ভাষা এ বার হাইকোর্টের মুখে৷ কেন্দ্র ও রাজ্যে দু’টি রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আছে বলেই কি পাহাড়ের মানুষের এই দুরবস্থা ? পাহাড়ে বাহিনী পাঠানো নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য কাজিয়ায় বিরক্ত হাইকোর্ট এই প্রশ্ন তুলল মঙ্গলবার৷ এ দিন ভারপ্রান্ত প্রধান বিচারপতি নিশীথা মাত্রে ও বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চে পাহাড় মামলাটি উঠলে , দু’পক্ষের চাপানউতোরে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে আদালত৷ পাহাড়ে শান্তি ফেরাতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে আগামী শুক্রবারের মধ্যে হলফনামা দিয়ে তা জানাতে বলা হয়েছে রাজ্যকে৷

পাহাড়ে বন্ধ চলছেই , অথচ কোনও পক্ষের তা নিয়ে মাথাব্যথা নেই ! বিস্মিত জিজ্ঞাসা ডিভিশন বেঞ্চের৷ এ দিন কেন্দ্রের তরফে অ্যাডিশনাল সলিসিটার জেনারেল কৌশিক চন্দ্র জানিয়ে দেন , সোমবার দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিশেষ সচিবের সঙ্গে এ রাজ্যের এডিজি (আইন শৃঙ্খলা ) অনুজ শর্মার বৈঠক হয়৷ সেই বৈঠকে কেন্দ্র খতিয়ে দেখেছে , পাহাড়ে পর্যান্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী দেওয়া হয়েছে৷ এর বেশি বাহিনী দেওয়ার প্রয়োজন নেই৷ আর বাহিনী বদলের যে আবেদন রাজ্য করেছে , নীতিগত কারণে তা মানতে নারাজ কেন্দ্র৷

রাজ্যের তরফে পাহাড়ে থাকা শীর্ষ অফিসারদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে সেখানে থাকা বাহিনীকে সঠিক ভাবে ব্যবহার করা যাচ্ছে না বলেও অভিযোগ করে কেন্দ্র৷

সিকিমে খাদ্যপণ্য সরবরাহ ব্যাহত হওয়া প্রসঙ্গে কেন্দ্রের প্রতিনিধি জানান , সেনার সঙ্গে সমন্বয় করে কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক সিকিমে যাতে জ্বালানি সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা যায় তা নিশ্চিত করছে৷ রাজ্যের যে স্পেশ্যাল ফোর্স রয়েছে তার পরিমাণ কত, তা জানতে চাওয়া হলেও রাজ্য সে তথ্য দিচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন কেন্দ্রের আইনজীবী৷ রাজ্যের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত পাল্টা বলেন , পাহাড়ে বাহিনী না -দিয়ে কেন্দ্র বিষয়টি গুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে৷

দু’পক্ষের তরজার মাঝেই আদালতের প্রশ্ন, সিবিআই কী করছে ? কারণ , মদন তামাং খুনে বিমল গুরুং -সহ অভিযুক্ত মোর্চা নেতাদের আগাম জামিনের শর্ত হিসেবে বিচারপতি অসীম কুমার রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ বেশ কিছু শর্ত দিয়েছিল৷ সেই শর্ত অনুুযায়ী , নিম্ন আদালতে ওই মামলার চার্জ গঠনের আগের দিন থেকে সব অভিযুক্তকে কলকাতায় থাকতে হবে৷ এখানে কোথায় তাঁরা থাকছেন , সেই ঠিকানা এবং মোবাইল নম্বর জানাতে হবে কলকাতা পুলিশকে৷ বিচার ভবনে অবশ্য এখনও সেই চার্জ গঠন হয়নি৷ যদিও এই মামলায় অভিযোগ করা হয় , চার্জ গঠনের আগে শুনানির মধ্যে মাত্র একদিন হাজির ছিলেন গুরুং৷ কেন্দ্রের তরফে অতিরিক্ত সলিসিটার জেনারেল দাবি করেন , তিনি কয়েকদিন পরেই সিবিআইয়ের তরফে বিষয়টি জানাবেন৷

তাতে আরও বিরক্ত আদালতের বক্তব্য , ‘পাহাড়ে মানুষ মরছে৷ খাবার পাচ্ছে না৷ এই সময়ে সমন্বয় রেখে কাজ করাটাই জরুরি৷ সিবিআই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখলে , ওই মামলায় যদি আদালত অবমাননা হয়ে থাকে তা হলে তাঁদের নামিয়ে আনা যেত৷ সিবিআই কি ধৈর্যের পরীক্ষা দিচ্ছে ?’ এর পরেই হাইকোর্ট কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের যুগ্ম সচিবকে হলফনামা দিয়ে জানাতে বলে , কেন তারা পাহাড়ে আর কেন্দ্রীয় বাহিনী দিচ্ছে না৷ অন্যদিকে রাজ্যের এডিজি (আইন শৃঙ্খলা ) হলফনামা দিয়ে জানাবেন , তাঁদের স্পেশাল ফোর্সে কত জওয়ান রয়েছেন৷ সিবিআইকেও মামলায় যুক্ত করতে হবে৷ সিবিআই হলফনামা দিয়ে জানাবে ওই মামলায় তাদের বক্তব্য৷ আবার রাজ্য পৃথক হলফনামা দিয়ে জানাবে , পাহাড়ে শান্তি ফেরাতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে৷ আগামী শুক্রবার পরবর্তী শুনানি৷

গুরুংকে কড়া বার্তা, আবার তলব ক্ষুব্ধ শিশু কমিশনেরএই সময় : মিছিলে শিশু -কিশোরদের সামিল করায় গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রধান বিমল গুরুংকে আগেই সমন পাঠিয়েছিল রাজ্য শিশু অধিকার রক্ষা কমিশন৷ হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল মঙ্গলবার৷ কিন্ত্ত গুরুং কমিশনে না -আসায় তাঁর বিরুদ্ধে ‘লেটার অফ প্রোক্লেমেশন ’ জারি করল কমিশন৷ তাঁকে ফের ৩১ জুলাই কমিশনে সশরীরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী বলেন , ‘ওই দিনও যদি বিমল গুরুং না -আসেন তখন ওঁর বিরুদ্ধে জামিন -অযোগ্য গ্রেন্তারি পরোয়ানা জারি করা হবে কমিশনের তরফে৷ ’ এক সন্তাহের মধ্যে পর পর দু’বার শিশু -কিশোরদের নিয়ে দার্জিলিংয়ে মিছিল করেছিল মোর্চা৷ প্রথমে ২৯ জুন ও পরে ৩ জুলাই৷ যদিও প্রথম দিনই কমিশন শো -কজ করেছিল গুরুংকে৷ কিন্ত্ত তার উত্তর দেওয়া তো দূর অস্ত্, ৩ তারিখ একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি করে মোর্চা৷ তখনই মোর্চা সুপ্রিমোকে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে সমন পাঠিয়ে ১১ জুলাই তলব করা হয়েছিল কমিশনে৷ কিন্ত্ত তিনি না -আসায় এ দিন গুরুংয়ের বিরুদ্ধে ‘লেটার অফ প্রোক্লেমেশন ’ ইস্যু করে কমিশন জানায় , নাবালক ও শিশুদের মিছিলে সামিল করা শিশু অধিকারই শুধু নয় , শিশুসুরক্ষারও পরিপন্থী৷

আন্তর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্র হবে দিঘা, ঘোষণা মমতার

$
0
0

তাপস প্রামাণিক ■ দিঘা
দিঘাকে আন্তর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে একাধিক পরিকল্পনা নিচ্ছে রাজ্য সরকার৷ মঙ্গলবার দিঘায় সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে এ কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ দিঘায় পর্যটকদের যাতে কোনও হয়রানির মুখে পড়তে না হয় , তার জন্য দল ও প্রশাসনকে মমতা বলেন , ‘আগামী দিনে দিঘায় অনেক বিদেশি পর্যটক আসবেন৷ যাঁরা এখানে বেড়াতে আসছেন , তাঁরা আপনাদের অতিথি৷ অতিথি হচ্ছেন লক্ষ্মী৷ তাঁদের যত্ন করে রাখতে হবে৷ দিঘায় যত পর্যটক আসবেন , ততই নতুন হোটেল তৈরি হবে৷ কর্মসংস্থান হবে৷ ’

মুখ্যমন্ত্রী জানান , ক্ষমতায় আসার পরে তিনিই প্রথম দিঘার কাছে উদয়পুরে নতুন পর্যটন কেন্দ্র আবিষ্কার করেছিলেন৷ তাঁর সরকারের আমলেই দিঘা , শঙ্করপুর , মন্দারমণি এবং তাজপুর সমুদ্র সৈকত নতুন করে সেজে উঠেছে৷ তাজপুরে সরকার গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছে৷ নতুন করে তৈরি হচ্ছে দিঘা মেরিন ব্রিজ৷ তার কাজ দ্রুত শেষ করতে এ দিনই হলদিয়া ডেভেলপমেন্ট অথরিটিকে দায়িত্বভার দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ যদিও সে কাজ করার কথা ছিল নগরোন্নয়নের দন্তরের৷ এ ব্যাপারে মুখ্যসচিব মলয় দেকে নির্দেশ দিয়েছেন মমতা৷ তিনি জানিয়ে দিয়েছেন , দিঘায় পর্যটকদের অসুবিধে সৃষ্টি করে কিছু করা হলে সরকার কড়া ব্যবস্থা নেবে৷ রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরির নাম করে মুখ্যমন্ত্রী জানান , জোর করে দোকান বসিয়ে রাস্তা দখল করা যাবে না৷ রাস্তা যেন দখল না হয়ে যায় , সেটা দেখতে হবে৷ দরকার হলে হকারদের জন্য মার্কেটিং সেন্টার অথবা হকার মার্কেট বানিয়ে দিতে হবে৷

তিনি জানিয়েছেন , প্রায় ২৫৬ কোটি টাকা খরচ করে নন্দকুমার থেকে দিঘা পর্যন্ত রাস্তার সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার৷ মমতা জানান , দার্জিলিংয়ে অশান্তি চলায় বাঙালি পর্যটকরা এখন দিঘা , বকখালিতে ভিড় করছেন৷ রোজ গড়ে এক থেকে দেড় লক্ষ মানুষ দিঘায় আসছেন৷ সেই সঙ্গে পরিকাঠামোগত উন্নয়নের প্রসঙ্গ তুলে বলেন , ‘যখন লোকে আমাকে বলে দিঘা বদলে গিয়েছে , আমার বুকটা গর্বে ফুলে ওঠে৷ এখন দার্জিলিংয়ে যেতে পারছে না বলেই লোকে দিঘাকে বেছে নিয়েছে৷ ’
দু’দিনের সফরে সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার রাত থেকে দিঘায় রয়েছেন৷ রয়েছেন জেলা ও রাজ্যের তাবড় সরকারি আধিকারিকরা৷ ভিআইপিদের নিরাপত্তার জন্য সোমবার থেকে দিঘা শহরে যানচলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে৷ ফলে রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা কম৷ তার উপর অফিসার ও পুলিশকর্মীদের জন্য বহু হোটেল বুক করেছে প্রশাসন৷ তাতেও মঙ্গলবার সকালে সমুদ্র সৈকতে গিয়ে দেখা যায় , পর্যটকদের ভিড়ে পুরো এলাকা থিক থিক করছে৷

সরকারি সৈকত আবাসে উঠেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তাঁর নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে সৈকত আবাসের সীমানা বরাবর উপকূল পর্যন্ত সবুজ কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে৷ বসেছে পুলিশ প্রহরা৷ তা সত্ত্বেও মুখ্যমন্ত্রীকে চোখের দেখা দেখতে বহু পর্যটক সেখানে ভিড় জমান৷ দিঘার ভোলবদলে তাঁরাও মুখ্যমন্ত্রীকে ফুল মার্কস দিচ্ছেন৷ বারাসতের বাসিন্দা মানিক হালদার বলেন , ‘আগে দিঘায় সৈকতে যাওয়ার রাস্তায় সারি সারি হোগলার দোকান , ভাঙা ইটের রাস্তা ছিল৷ চতুর্দিকে আবর্জনার স্তূপ৷ এখন সমুদ্রের পাড়ে পেভার ব্লক দিয়ে বাঁধানো চওড়া রাস্তা , ল্যাম্প পোস্ট৷ হকারদের মার্কেট কমপ্লেক্স৷ পরিচ্ছন্ন সুলভ শৌচাগর৷ ’

মঙ্গলবার সেখানেই একটি আন্তর্জাতিক মানের কনভেনশন ও এগজিবিশন সেন্টারের শিলান্যাস করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ পরিকল্পনা অনুযায়ী , এখানে প্রায় একহাজার জনের বসার ব্যবস্থা -সহ একটি প্রশস্ত অডিটোরিয়াম থাকবে৷ তার মধ্যেই থাকবে সেমিনার হল ও কনফারেন্স রুম৷ রাজারহাটের পরে রাজ্যে একমাত্র দিঘাতেই এ ধরনের কনভেনশন সেন্টার তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার৷

রম্ভির বিদ্যুত্কেন্দ্রও বন্ধ, নেতারা মানছেন রাশ নেই

$
0
0

এই সময়, শিলিগুড়ি: পাহাড়ের পরিস্থিতি উন্নতির কোনও লক্ষণ নেই৷ এ বার রম্ভি জলবিদ্যুত্ কেন্দ্রটিও বন্ধ করে দিলেন আন্দোলনকারীরা৷ বুধবার ওই কেন্দ্রের সামনে জড়ো হন কয়েকশো মানুষ৷ স্লোগান ছিল, ‘বিদ্যুত্ উত্পাদন করা যাবে না৷ ’ তাত্পর্যপূর্ণ ভাবে, মোর্চা-সহ পাহাড়ের রাজনৈতিক দলগুলিকে নিয়ে তৈরি গোর্খাল্যান্ড মুভমেন্ট কোঅর্ডিনেশন কমিটির (জিএমসিসি ) যুগ্ম আহ্বায়ক মোর্চা নেতা কল্যাণ দেওয়ান কবুল করেছেন, আন্দোলনকারীরা এখন তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে৷ অশনি সঙ্কেত সেটাও!

বর্ষায় জলবিদ্যুত্ প্রকল্পগুলি পুরোমাত্রায় বিদ্যুত্ তৈরি করে, যা বছরের অন্য সময়ে জলাভাবে অসম্ভব৷ কেন্দ্রীয় সরকার অধিগৃহীত সংস্থা এনএইচপিসি পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া সিকিমেও তিস্তা নদীর উপরে একাধিক প্রকল্প তৈরি করেছে৷ উত্পাদিত বিদ্যুতের একটা অংশ এনএইচপিসি সংশ্লিষ্ট রাজ্যকেও সম্পূর্ণ বিনামূল্যে দেয়৷ সিকিমের প্রকল্পগুলি চললেও মোর্চার আন্দোলনে এ রাজ্যে এনএইচপিসির বিদ্যুত্ উত্পাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অস্বস্তিতে পড়েছে রাজ্য৷ এনএইচপিসির রম্ভির জনসংযোগ আধিকারিক জে কে উপাধ্যায় বলেন , ‘এদিন দুপুরে গোলমালের পরে আমরা জলবিদ্যুত্ উত্পাদন বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছি৷ ’ সন্ধ্যায় বন্ধ হয়ে যায় কালীঝোরাও৷ বিদ্যুত্ উত্পাদন ছাড়া তিস্তার জলও এখন নিয়ন্ত্রণ করে এনএইচপিসি৷ প্রতিদিন সন্ধ্যায় কালীঝোরা থেকে জল ছাড়া হয়৷ এ বার জল ছাড়া কী ভাবে নিয়ন্ত্রণ হবে , প্রশ্ন তা নিয়েও৷ এনএইচপিসির শিলিগুড়ির জনসংযোগ আধিকারিক ভরতেন্দু শর্মা বলেন , ‘নিরাপত্তা না -পেলে কী ভাবে কাজ করব ? আমরা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি৷ ’রম্ভির ঘটনায় সবচেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন খোদ মোর্চা নেতারাই৷ জিএমসিসির যুগ্ন আহ্বায়ক মোর্চা নেতা কল্যাণ দেওয়ানও স্বীকার করেছেন , ‘মানুষ এখন আমাদের কথাও শুনতে চাইছেন না৷ রম্ভিতে কী হয়েছে সেটা আমি জানি না৷ তবে রাজ্য সরকারের পুলিশ আমাদের কর্মীদের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে গুলি চালানোয় এই ধরনের ঘটনা ঘটছে৷ পুলিশকে সংযত হতে হবে৷ পাহাড় থেকে সিআরপি সরাতে হবে৷ আমাদের দাবিগুলি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে হবে৷ না -হলে পরিস্থিতি শান্ত হবে না৷ ’

কয়েকদিন ধরেই মোর্চা কর্মীরা জলবিদ্যুত্ উত্পাদন বন্ধ করার জন্য হুমকি দিচ্ছিলেন৷ এনএইচপিসি মোর্চা নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরিস্থিতি বোঝানোর চেষ্টা করে৷ সম্প্রতি মোর্চা সভাপতি হুমকি দেন , পাহাড়ে রাজ্য সরকারের সমস্ত জলবিদ্যুত্ উত্পাদন কেন্দ্র বন্ধ করে দিতে হবে৷ তার পরেই জলবিদ্যুত্ কেন্দ্রগুলিতে একের পর এক হামলা শুরু হয়৷ রাম্মাম স্টেজ -৩ প্রকল্প তৈরির ব্যাপারে এনএইচপিসি ছাড়াও অন্য এক বেসরকারি সংস্থা সমীক্ষা করছিল৷ প্রথমে সেখানে হামলা হয়৷ পুড়িয়ে দেওয়া হয় বেসরকারি সংস্থার বেশ কিছু গাড়ি৷ তার পরে রাম্মামের একদল মোর্চা কর্মী -সমর্থকই কাজ করতে অস্বীকার করেন৷ এক ঘটনা ঘটে জলঢাকায়৷ বন্ধ রম্ভিও৷ রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেছেন , ‘প্রশাসন অবগত৷ দেখা যাক , কী করা যায়৷ ’ মঙ্গলবার রাতে মিরিকে ডুপটিন গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে আগুন লাগানো হয়৷ ভাঙচুর হয় কালিম্পংয়ে লিম্বু উন্নয়ন বোর্ডের দন্তরও৷ তামাং উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান সন্ধ্যা তামাংয়ের বাড়িতে ও সুকনার আরআই অফিসে আগুন লাগানো হয়৷ রাত ১২টা নাগাদ ম্যালের জিটিএ পরিচালিত ট্যুরিস্ট ইনফর্মেশন ব্যুরোতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়৷মোর্চা কর্মী -সমর্থকদের বিক্ষোভ৷ বুধবার রম্ভিতে --- বি এন শা৷

মেয়ের মৃত্যুর বিচার চেয়ে মমতার দ্বারস্থ

$
0
0

তাপস প্রামাণিক, দিঘা

তিনি পূর্ব মেদিনীপুরের তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্য৷ তাঁরই মেয়েকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ রয়েছে শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে৷ ঘটনার পরই অভিযোগ জানিয়েছেন থানায়৷ মেয়ের খুনের বিচার চেয়ে দ্বারস্থ হয়েছেন দলের নেতাদের কাছে৷ তবু বিচার পাননি৷ নিহতের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা না -বলেই গোপনে চার্জশিট পেশ করে দিয়েছে পুলিশ৷ আদালত থেকে জামিন পেয়ে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন অভিযুক্তরা৷ তাই মুখ্যমন্ত্রীকে কাছে পেয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন তমলুক থেকে নির্বাচিত তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্য উমা মাইতি৷

বুধবার দিঘায় জেলা প্রশাসনিক বৈঠকে এলাকার দাবিদাওয়া পেশ করতে উঠে নিজের মেয়ের খুনের প্রসঙ্গ তুলে পুলিশকে কাঠগড়ায় তোলেন উমা৷ মুখ্যমন্ত্রীকে বলেন, ‘আমার মেয়েকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে৷ এখনও পর্যন্ত তার চার্জশিট দেওয়া হয়নি৷’ এতে বিড়ম্বনায় পড়ে যান মুখ্যমন্ত্রীর পাশে বসে থাকা পুলিশকর্তারা৷ বিস্মিত মুখ্যমন্ত্রী জেলা পুলিশ সুপারকে প্রশ্ন করেন, ‘এটা কেন হবে? এ সব বিষয় পুলিশ কেন গুরুত্ব দিয়ে দেখবে না?’ জবাবে এসপি বলেন , ওই ঘটনার চার্জশিট ইতিমধ্যেই জমা পড়েছে৷ কিন্ত্ত তাতেও সন্ত্তষ্ট হননি উমা৷ তিনি ফের উঠে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘পুলিশ তো আমাদের সঙ্গে কোনও কথাই বলেনি৷ তা হলে কী করে চার্জশিট জমা পড়ে গেল?’ এর পরই মুখ্যমন্ত্রী এসপিকে নির্দেশ দেন, পরিবারের সঙ্গে যেন পুলিশ কথা বলে নেয়৷

পুলিশ সূত্রের খবর, গত বছরের ডিসেম্বরে শ্বশুরবাড়িতে দুধ গরম করার সময় উমা মাইতির মেয়ের কাপড়ে আগুন লেগে যায়৷ স্ত্রীকে বাঁচাতে গিয়ে স্বামীও অগ্নিদগ্ধ হন৷ প্রথমে তমলুক হাসপাতালে ভর্তি করা হয় অগ্নিদগ্ধ তরুণীকে৷ পরে তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় উলুবেড়িয়ার কাছে তাঁর মৃত্যু হয়৷ পুলিশের দাবি, আগুন লাগার পর তরুণী দীর্ঘক্ষণ বেঁচে থাকলেও, পুলিশের কাছে তিনি কোনও জবানবন্দি দিতে রাজি হননি৷ পোস্টমর্টেম রিপোর্টেও গ্যাস থেকে আগুন লাগার প্রমাণ মিলেছে৷ তা সত্ত্বেও পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে স্বামীকে গ্রেন্তার করা হয়েছিল৷ কিন্ত্ত প্রমাণের অভাবে তিনি আদালত থেকে ছাড়া পেয়ে যান বলে পুলিশের দাবি৷

এদিনের বৈঠকে হলদিয়ার বিভিন্ন কলকারখানায় জুলুমবাজি , দিঘার হোটেলগুলিতে পর্যটকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া এবং হকার রাজ নিয়ে কড়া ভাষায় প্রশাসন ও দলকে হুঁশিয়ার করে দেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি সাফ জানিয়ে দেন , যখন পর্যটকদের চাপ বেশি থাকে , সেই সময় দিঘার কোনও হোটেল মলিক যেন অতিরিক্ত ভাড়া দাবি না-করেন৷ তাঁর কথায়, ‘সোনার ডিম পাড়া হাঁসকে একদিনে সব খেয়ে ফেললে কী করে হবে?’ পর্যটকদের সুবিধার্থে কোলাঘাট থেকে দিঘা পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় ‘হেল্প ইউ’ কিয়স্ক চালু করার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা৷ দিঘার সমুদ্রে দুর্ঘটনা ঠেকাতে সাইরেন চালু করা এবঁ পুলিশি নজরদারি বাড়ানোরও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি৷

মুখ্যমন্ত্রী এ দিন আবার ঘোষণা করেছেন, হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে কোনও কারখানায় গন্ডগোল করা যাবে না৷ সেটা দেখার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি৷ প্রস্তাবিত দিঘা-শঙ্করপুরের সংযোগকারী নতুন মেরিন ব্রিজ তৈরির কাজে ঢিলেমি নিয়ে দিঘা -শঙ্করপুর ডেভলপমেন্ট অথরিটি, পূর্ত ও সেচ দন্তরের আধিকারিকদের কার্যত ভত্র্‌সনা করেন৷ তাঁর নির্দেশ অনুযায়ী, আগামী এক বছরের মধ্যেই ব্রিজ নির্মাণের কাজ শেষ করতে হবে৷ মুখ্য দায়িত্বে থাকবে পূর্ত দন্তর৷ তাদের সাহায্য করবে হলদিয়া ডেভেলপমেন্ট অথরিটি এবং সেচ দন্তর৷

পাহাড়ে দফায় দফায় আগুন, মোর্চার অবরোধে থমকাল গৌতম দেবের গাড়ি

$
0
0

এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: পাহাড়ে ফের জঙ্গি আন্দোলন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার। পানিঘাটায় পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেবের গাড়ি আটকে পড়ল মোর্চা সমর্থকদের পথ অবরোধে। এদিকে, ম্যালের পর্যটক সহায়ক কেন্দ্র ও তিস্তা বাজারে বনদপ্তরের অফিসে আগুনও ধরিয়ে দেয় মোর্চা।



ভানুভক্ত জন্মজয়ন্তীতে যোগ দিতে বৃহস্পতিবার পানিঘাটায় যাওয়ার কথা গৌতম দেবের। তবে বন্‌ধ সমর্থকদের পথ অবরোধে তাঁর গাড়ি আটকে পড়ে। বুধবার রাত থেকেই পাহাড়জুড়ে তাণ্ডব শুরু করেছে বিমল গুরুং-এর দল। বুধবার রাতে তিস্তা বাজারে বন দপ্তরের অফিসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।



আগুন ধরানো হয় ম্যালে পর্যটক সহায়ক কেন্দ্র ও দার্জিলিং-এ GTA-এর পর্যটন দপ্তরের অফিসে। রাতেই তামাং বোর্ডের সঞ্জয় মোক্তানের বাড়িতেও আগুন ধরিয়ে দেন মোর্চা সমর্থকরা। তিস্তা বনবাংলোও জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। সিকিমগামী জাতীয় সড়কে গাড়ি ভাঙচুর করেছে মোর্চা। বুধবার রাতে কার্শিয়াং-এ ঘয়াবাড়ি রেল স্টেশনও জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।

#Morcha people set fire forest office in tista bazar yesterday night.

#Due to road boackade by morcha people Tourism Minister Goutam dev failed to reach Panighata. Tourism minister will attend bhanu bhakt janma jayanti in panighata.


পাহাড়ে নেপালের মাওবাদীরা, বড় হিংসার ছক

$
0
0

এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: পাহাড়ে বসে বড় হিংসাত্মক ঘটনার চক্রান্ত করে চলেছে নেপালের মাওবাদীরা। পুলিশ ও সরকারি আধিকারিকদের টার্গেট করে এই হামলা হতে পারে। গোয়েন্দা রিপোর্টে দার্জিলিঙে নেপালি মাওবাদীদের উপস্থিতির উল্লেখ করে, পুলিশ-প্রশাসনকে সতর্ক করা হয়েছে।

গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনের নামে পাহাড়ে দিনে দিনে যেভাবে হিংসাত্মক ঘটনা বাড়ছে, তাতে প্রথম থেকেই বাইরের 'শক্তি'র হাত রয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছিল। সেই সন্দেহকেই সিলমোহর দিল গোয়েন্দা রিপোর্ট।

পাহাড়ে আন্দোলনের রাশ গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার হাত থেকে ক্রমে বেরিয়ে যাচ্ছে। লাগাতার বন্‌ধের মধ্যেই কখনও সরকারি দফতরে আগুন লাগানো হচ্ছে, কখনও আবার পোড়ানো হচ্ছে পুলিশের গাড়ি। গোয়েন্দাদের দাবি, মোর্চার বিক্ষোভকারীদের মধ্যে মিশে আন্দোলনের রাশ হাত তুলে নিচ্ছে নেপালের মাওবাদীরা।

বৃহস্পতিবার রাজ্য সরকার আদালতে পাহাড়ে ক্ষয়ক্ষতির যে হিসেব পেশ করেছে, তা খুব কম নয়। আন্দোলনের ৩১ দিনে ক্ষতির আর্থিক অঙ্ক ৩৫৫ কোটি টাকা। এই একমাসে পুলিশের গাড়ি-সহ মোট ৫৮টি সরকারি গাড়ি ভাঙচুর নয়তো আগুন ধরানো হয়েছে। ৯৩টি সরকারি দফতর লন্ডভন্ড করা হয়েছে। কয়েকটিতে আগুন দিয়েছে মোর্চার বিক্ষোভকারীরা। পুলিশ ও সরকারি কর্মী মিলিয়ে মোর্চার হাতে আক্রান্ত হয়েছে ১১৩ জন।

জঙ্গিপুরে প্রাণের আড্ডায় রাষ্ট্রপতি

$
0
0

শীর্ষেন্দু গোস্বামী ■ জঙ্গিপুর

আড্ডা দিতে আসছেন রাষ্ট্রপতি৷ মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরে৷
এক মাস চার দিন পরেই তাঁর ছুটি৷ তার আগে ঘণ্টাখানেক হলেও আড্ডা দিতে চান জঙ্গিপুর ভবনে৷ রাতও কাটাবেন সেখানেই৷ এই জঙ্গিপুরই তাঁর বহুদিনের সাধ মিটিয়েছিল৷ এখানেই ভোটে জিতে প্রথমবার লোকসভায় গিয়েছিলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়৷ এই বিরাট বাড়িটি তাঁরই বানানো৷ জীবনের অধিকাংশ সময় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থাকলেও ভোটে জেতার সৌভাগ্য হয়নি৷ বরাদ্দ ছিল শুধু রাজ্যসভার আসন৷ জঙ্গিপুরের সাংসদ থাকাকালীনই তিনি দেশের প্রথম বাঙালি রাষ্ট্রপতি হওয়ার সম্মান অর্জন করেছিলেন৷ জঙ্গিপুরের প্রতি তাই টান রয়েছে রাষ্ট্রপতির৷ শুক্রবার দু’দিনের সফরে জঙ্গিপুরের প্রতি তাঁর কৃতজ্ঞতাই প্রকাশ করতে আসছেন প্রণব৷ তাঁর সরকারি কর্মসূচির মধ্যে অন্যতম হল ঘণ্টা খানেক জঙ্গিপুরের সাধারণ মানুষের সঙ্গে সৌজন্য আলাপচারিতা৷

২০০৪ -এ সাংসদ হওয়ার পর নির্বাচনী কেন্দ্রের বাসিন্দাদের কাছাকাছি আসতে প্রণব জঙ্গিপুরে বাড়ি বানিয়েছিলেন৷ বাড়ির নাম জঙ্গিপুর ভবন৷ শুক্রবার সেখানেই তিনি আড্ডা দেবেন স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে৷ রাষ্ট্রপতি -পুত্র অভিজিত্ মুখোপাধ্যায় জানালেন , রাতও কাটাবেন এই বাড়িতে৷

প্রথম বার লোকসভায় জেতার পর জঙ্গিপুরকে কখনও ভোলেননি প্রণব৷ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসাবে দেশে -বিদেশে যতই ব্যস্ততাই থাক না কেন , নিয়ম করে প্রতি সন্তাহে একবার জঙ্গিপুর ঘুরে যেতেন৷ স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য ছিল তাঁর অবারিত দ্বার৷ রাষ্ট্রপতি হিসাবে যতই নিরাপত্তার কড়া ঘেরাটোপ থাকুক না কেন , শুক্রবারও জঙ্গিপুর ভবনে স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য দরজা খোলাই রাখা হচ্ছে বলে জানালেন অভিজিত্৷

দু’দিন আগে থেকেই জঙ্গিপুর ভবনের নিরাপত্তা চলে গিয়েছে এসপিজির হাতে৷ তার মধ্যেই প্যান্ডেল বেঁধে চলছে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আমজনতার আলাপচারিতার মঞ্চ নির্মাণ৷ জঙ্গিপুরের সাংসদ থাকাকালীনই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী হয়ে প্রণব সত্যভারতী নামে ১০টি স্কুল করে দিয়েছিলেন পিছিয়ে পড়া শ্রেণির সন্তানদের জন্য৷ শুক্রবার কানাদিঘিতে আরও একটি সত্যভারতী স্কুলের উদ্বোধন করবেন তিনি৷ বাবা কামদাকিঙ্করের নামে জঙ্গিপুরে যে ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু হয়েছিল তাঁর হাতে , এ বারও তার সূচনা করবেন তিনিই৷ রাজনৈতিক -প্রশাসনিক জীবন থেকে সরে যাওয়ার আগে তাঁর এই সফর ঘিরে উত্সাহী স্থানীয় বাসিন্দারাও৷ জঙ্গিপুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী জাকির হোসেন বলেন , ‘রাষ্ট্রপতি সাধারণ মানুষের সঙ্গে দেখা করবেন৷ আমরা খুবই খুশি৷ প্রণববাবু আমাদের গর্ব৷’ রঘুনাথগঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক আখরুজ্জমানের কথায় , ‘জঙ্গিপুরের প্রতি প্রণববাবু বরাবরই দুর্বল৷

৪০০ আসন কমল ডাক্তারিতে

$
0
0

অনির্বাণ ঘোষ

ডাক্তারিতে ভর্তি শুরুর মুখেই দুঃসংবাদ! মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া (এমসিআই) অনুমোদন না-দেওয়ায় প্রায় ৪০০ এমবিবিএস আসন কমে গেল এ রাজ্যের৷ ফলে আর ২৬০০ নয়, চলতি শিক্ষাবর্ষে এ বছর রাজ্যের ২২০০ আসনেই ছাত্রভর্তি সম্ভব হবে বলে স্বাস্থ্যভবন সূত্রের খবর৷ ছাড়পত্র না-পাওয়া এই ৪০০ আসন তিনটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের৷ কিছু দিন আগেই এমসিআইয়ের সুপারিশ মেনে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক এই তিনটি কলেজকে জানিয়ে দিয়েছিল যে চলতি বছর ছাত্রভর্তির অনুমতি তাদের দেওয়া হচ্ছে না৷ তার পরেও অবশ্য হারানো ছাড়পত্র ফিরে পাওয়ার জন্য হলদিয়ার আইকেয়ার (১০০), দুর্গাপুরের আইকিউ সিটি (১৫০) ও গৌরীদেবী মেডিক্যাল কলেজ (১৫০) লাগাতার তদ্বির চালাচ্ছিল বিভিন্ন স্তরে৷

কিন্তু মঙ্গলবার স্বাস্থ্যভবন ছাত্রভর্তির জন্য যে আসনবিন্যাস (সিট ম্যাট্রিক্স) প্রকাশ করেছে, তাতে এই তিনটি কলেজের ৪০০ আসনের উল্লেখ নেই৷ রাজ্যের চিকিত্সা-শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য আসন কমার কথা স্বীকার করে নিয়ে বলেন, ‘এখনও পর্যন্ত অনুমোদন মেলেনি৷ তাই এই তিনটি কলেজকে বাদ দিয়েই শুরু হয়ে গিয়েছে প্রথম পর্বের কাউন্সেলিং প্রক্রিয়া৷ অচিরেই যদি ওই তিনটি কলেজ কর্তৃপক্ষ অনুমোদন পায়, তো ভালো, অন্যথায় ওই ৪০০ আসন ছাড়াই চলতি বছর ছাত্রভর্তি সম্পন্ন করতে হবে৷’

পরিকাঠামোর অভাবে এমবিবিএস আসনে ছাত্রভর্তি করার অনুমোদন না-পাওয়ার নজির অবশ্য এই প্রথম নয়৷ গত পাঁচ-সাত বছর ধরে দেখা যাচ্ছে, ছাত্রভর্তির অনুমতি না-পাওয়ার বিষয়টি প্রায় প্রথায় পরিণত হয়ে গিয়েছিল৷ এবং আসন হারানোর সেই তালিকায় বেসরকারির পাশাপাশি থাকত বেশ কয়েকটি সরকারি মেডিক্যাল কলেজও৷ কিন্ত্ত চলতি বছর কোনও সরকারি আসন নিয়ে সমস্যা হয়নি৷ অনুমতি মেলেনি স্রেফ তিনটি বেসরকারি কলেজের ৪০০ আসন৷ এমসিআইয়ের এক আধিকারিক বলেন, ‘এমন নয় যে, ওঁদের সুযোগ দেওয়া হয়নি৷ বরং গত বছরের শেষে এমবিবিএস কোর্সে ছাত্রভর্তির অনুমোদন কেড়ে নেওয়ার পর ওঁদের ভুলত্রুটি শুধরে নেওয়ার জন্য ছ’ মাসে কমপক্ষে তিন বার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল৷ কিন্ত্ত তাতেও ওঁদের পরিকাঠামোর আশানুরূপ মানোন্নয়ন হয়নি একেবারেই৷ তাই ছাড়পত্র আটকানো ছাড়া উপায় ছিল না৷’ বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ কর্তারা অবশ্য এমসিআইয়ের পদক্ষেপে ঘোর অসন্তোষ ব্যক্ত করছেন৷ গৌরীদেবী মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ জিসি সাহু বলেন, ‘কী আর করা যাবে! ইদানীং দেখছি, পরিদর্শনের নামে সবেতেই খুব বাড়াবাড়ি আর কড়াকড়ি করছে এমসিআই৷ তারই শিকার আমরা৷ দেশে যখন আরও বেশি সংখ্যক চিকিত্সক প্রয়োজন, তখন এমসিআইয়ের এই ভূমিকা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক৷ দেখা, যাক কী হয়৷’ একই সুর আইকেয়ার ও আইকিউ সিটি মেডিক্যাল কলেজের কর্তাদেরও৷

মোর্চার তাণ্ডবে মন্ত্রীকে ফিরতে হল মাঝপথে

$
0
0

এই সময়, শিলিগুড়ি: যথেচ্ছ তাণ্ডবই এখন পাহাড়ের রোজনামচা৷ কার্যত ঠুঁটো পু্লিশের সামনে শেষপর্যন্ত পাহাড়ে ঢুকতে পারলেন না পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব৷ মোর্চার বাধায় তাঁকে রাস্তা থেকেই ফিরতে হল৷ নেপালি কবি ভানুভক্তের জন্মজয়ন্তী পালনে বৃহস্পতিবার পানিঘাটায় রাজ্য সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন গৌতম৷ সঙ্গে প্রচুর পুলিশ, সরকারি আধিকারিক, সাংস্কৃতিক কর্মী থাকলেও তিনি মোর্চার বাধায় আটকে পড়েন৷ পুলিশের সামনেই পাথর ফেলে, টায়ার জ্বালিয়ে কয়েকশো মোর্চা সমর্থক পথ অবরোধ করে৷ সংঘাতে না-গিয়ে রাস্তাতেই কোনও রকমে টেবিল-চেয়ার পেতে ভানুভক্তের গলায় মালা দিয়ে মন্ত্রী চলে যান কদমা মোড়ে৷

সেখানে ফের টেবিল পেতে অনুষ্ঠানের আয়োজন হতেই মোর্চা সমর্থকেরা জড়ো হয়ে যাওয়ায় চলে যেতে হয় মন্ত্রীকে৷ শেষপর্যন্ত শিলিগুড়ির কাছে ত্রিহানা চা-বাগানে মোটামুটি ভাবে ভানুভক্তের জন্মজয়ন্তী পালন করেন তিনি৷ দিনভর এমন হেনস্থায় ক্ষুব্ধ পর্যটনমন্ত্রী বলেন, ‘এই কি গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নমুনা? একজন মন্ত্রীকে সরকারি অনুষ্ঠান করতে বাধা দেওয়া হল! কেন্দ্রীয় সরকারের প্রচ্ছন্ন মদতেই মোর্চা এতটা বেপরোয়া হয়ে গিয়েছে৷’

মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি অবশ্য বলেন, ‘পানিঘাটার ঘটনায় আমাদের লোকেরা জড়িত নন৷’ ১০ জুন রাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দার্জিলিং থেকে নেমে আসার পরে এই প্রথম রাজ্যের কোনও মন্ত্রী পাহাড়ে ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন৷ দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক জয়সী দাশগুন্ত বলেছেন, ‘মোর্চার ডাকা বন্ধে সরকারি ক্ষতির পরিমাণ ৭ কোটি টাকা৷’

তিনি নিরাপদে শিলিগুড়ি ফিরে এলেও ক্ষিপ্ত মোর্চা কর্মীরা পরে পানিঘাটা রোডে কয়েকটি পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে৷ পানিঘাটা থানাতেও ঢিল-পাটকেল ছোড়ে৷ গোর্খাল্যান্ড মুভমেন্ট কো-অর্ডিনেশন কমিটির অন্যতম যুগ্ম আহ্বায়ক কল্যাণ দেওয়ান বুধবারই স্বীকার করেছিলেন যে আন্দোলনে নিয়ন্ত্রণ রাখা যাচ্ছে না৷ বুধবার রাতে গোটা পাহাড় তার নমুনা টের পেল৷ দার্জিলিংয়ে ম্যালের কাছে পর্যটন দন্তরের লাইব্রেরি, তিস্তাবাজারে বন দন্তরের অফিস, কর্মীদের কোয়ার্টার, বিজনবাড়ি ও ধোতরেতে বন বাংলো, গয়াবাড়িতে টয় ট্রেনের স্টেশন পোড়ানো হয়েছে৷ কালিম্পংয়ে আগুন ধরানো হয়েছে তামাং উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান সঞ্জয় তামাংয়ের বাড়ি৷ বৃহস্পতিবার সকালে তিস্তাবাজারে সিকিমগামী ১০টি ট্রাক ভাঙচুর করা হয়৷ ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনাতেও দায়িত্ব অস্বীকার করেছে মোর্চা৷

পাহাড়ে সরকার না-পারলেও বিধানসভায় ভানুভক্তের জন্মদিন পালিত হয়৷ বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী লিডার অফ দ্য হাউস৷ তিনি আলোচনায় বসার আবেদন জানিয়েছেন৷ বিধানসভায় যে তিনজন পাহাড় থেকে নির্বাচিত হয়ে এসেছেন তাঁদের কাছে আবেদন, আপনারা মুখ্যমন্ত্রীর আবেদনে সাড়া দিয়ে আলোচনায় বসুন৷’

গোর্খাল্যান্ড মুভমেন্ট কমিটির উদ্যোগে দার্জিলিংয়ের ম্যালে ভানুভক্তের জন্মজয়ন্তী অনুষ্ঠানে পূর্ব ঘোষণা মতোই রাজ্য সরকারের দেওয়া ভানুভক্ত পুরস্কার ফিরিয়ে দেন প্রভাত প্রধান, কৃষ্ণ মোক্তান এবং কর্মা ইয়েনজন৷ প্রভাত প্রধান বলেন, ‘আমরা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চাই না৷’

অশান্ত পাহাড়ে আরও ৪ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানোর নির্দেশ হাইকোর্টের

$
0
0

এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: উত্তাপ কমার যেন কোনও লক্ষণই নেই পাহাড়ে। অশান্তির আগুনে জ্বলছে পাহাড়। শুক্রবারও আগুন লাগানো হয় দার্জিলিং-এর সুখিয়াপোখরির পুলিশ চেকপোস্টে। এদিকে পাহাড়ে আরও চার কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানোর নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এই বাহিনী যাতে পাহাড়ে পৌঁছয়, তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। পাশাপাশি রাজ্যের অতিরিক্ত বাহিনীকেও দার্জিলিঙে পাঠাতে বলা হয়েছে।

পাহাড়ের অশান্ত পরিস্থিতি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক কারণের ফল। সাধারণ মানুষ এর ফলে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। বন্ধ রয়েছে স্কুল, খাবার ও পানীয় জলের মতো ন্যূনতম পরিষেবা। এই অবস্থায় রাজনৈতিক দলগুলির কোনও হেলদোল নেই বলে তিরস্কার করেছে হাইকোর্ট। অবিলম্বে পাহাড়ে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার উভয়কেই নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কেন্দ্রকে আরও চার কোম্পানি সিআরপিএফ পাহাড়ে পাঠাতে হবে। রাজ্যকেও পাহাড়ে আরও অতিরিক্ত বাহিনী পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।

অন্যদিকে, শুক্রবার রাতেও দার্জিলিংয়ে ৫ জায়গায় আগুন লাগানো হয়। কার্শিয়াংয়ে আরপিএফ-এর ডিরেক্টর বোর্ডের অফিসে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। পুড়ে ছাই হয়ে যায় বহু গুরুত্বপূর্ণ নথি। সুখিয়াপোখরি থানা এলাকার ছাবিশা চেক পোস্টে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। মিরিকের পুরনো লাইব্রেরিতেও আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। পুড়ে গিয়েছে বহু পুরনো বই এবং নথি। রেলিংয়ে পুলবাজারে সেরিকালচার অফিসেও আগুন লাগানোর খবর মিলেছে। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সুখিয়া ব্লকের মানিভঞ্জনের বাতাসি রেস্ট হাউসও।

বাম-কংগ্রেসের অলিখিত জোট, প্রস্ত্তত নলহাটি

$
0
0

হেমাভ সেনগুপ্ত ■ সিউড়ি
সিপিএমের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যতই চোখ রাঙান না কেন , এ রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে নির্বাচনী বোঝাপড়া ঠেকাতে পারবেন কিনা সন্দেহ৷ আসন্ন পুরভোটেই যে দুই দলের অলিখিত সমঝোতা হতে চলেছে , বৃহস্পতিবারই তার ইঙ্গিত মিলেছে নলহাটিতে৷ আরও ৬টি পুরসভার সঙ্গে নলহাটিতে ভোট হবে আগামী ১৩ অগস্ট৷ কেন্দ্রীয় কমিটির নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে কংগ্রেসের সঙ্গে দফায় দফায় সিপিএমের বীরভূম জেলা নেতৃত্ব বৈঠক করে চলেছেন বলে দুই দলের সূত্রেই খবর মিলেছে৷ নলহাটি পুরসভায় ১৫টি আসনের ৮টিতে কংগ্রেস লড়বে বলে ঘোষণা করে জানিয়ে দিয়েছে , বাকি আসনগুলিতে তারা কোনও ধর্মনিরপেক্ষ দলের প্রার্থীকে সমর্থন করবে৷ সিপিএমের মন্তব্যেও স্পষ্ট যে ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির বোঝাপড়ার আড়ালে আসলে আসন সমঝোতা হবে কংগ্রেসের সঙ্গে৷

সিপিএমের বীরভূম জেলা সম্পাদক মনসা হাঁসদা বলেন, ‘রবিবার নলহাটি পুর নির্বাচনের জন্য আমাদের দলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে৷ সেদিনই আমরা আমাদের অবস্থান স্পষ্ট করব৷ তবে বিজেপি ও তৃণমূলকে বাদ দিয়ে যে কোনও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে আমরা একত্রিত করার পক্ষে৷ ’ জেলা সম্পাদক ধোঁয়াশা রেখে মন্তব্য করলেও অনেকটা খোলসা করে নিজেদের অবস্থান জানিয়েছেন নলহাটির দায়িত্বপ্রান্ত সিপিএমের জেলা নেতা সনত্ প্রামাণিক বলেন, ‘আমরা চাইছি , তৃণমূল ও বিজেপি ছাড়া অন্য যে কোনও দল একসঙ্গে লড়াই করুক৷ মানুষের জোট তৈরি হোক৷ দলের নয়৷’ গত বিধানসভা নির্বাচনেও মানুষের জোটের তকমা দিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁদের জোটকে ঢেকে রাখতে চেয়েছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র৷

পরে দলের কেন্দ্রীয় কমিটি কড়া ভাষায় সেই অবস্থানের সমালোচনা করলেও পুরভোটে যে বিধানসভা নির্বাচনের সমঝোতার পুনরাবৃত্তি হতে চলেছে , নলহাটিতে তা স্পষ্ট৷ কংগ্রেসের বীরভূম জেলা সভাপতি সৈয়দ সিরাজ জিম্মি বলেন , ‘যে যে ওয়ার্ডে আমাদের দলের শক্তি বেশি , আমরা শুধু সেখানেই প্রার্থী দিচ্ছি৷ বাকি আসনগুলিতে ধর্মনিরপেক্ষ যে শক্তিশালী দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে , আমরা তাদের সমর্থন করব৷ নলহাটিতে শাসক বিরোধী জনগণ এটাই চাইছে৷ ’ তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই আঁতাঁতকে ধান্দাবাজি বলে কটাক্ষ করা শুরু হয়ে গিয়েছে৷ নলহাটির তৃণমূল বিধায়ক তথা পুরভোট পরিচালন কমিটির চেয়ারম্যান মইনুদ্দিন সামস বলেন, ‘মুখে নীতির কথা বলব আর ক্ষমতায় বসার জন্য নীতি বিসর্জন দিয়ে জোট করবো , এমন অবস্থান মানুষ আগেও মেনে নেয়নি , এ বারও নেবে না৷ ’দুই দলের সূত্রে জানা গিয়েছে , এ পর্যন্ত তিন বার বৈঠক করেছেন কংগ্রেস ও সিপিএম নেতারা৷ ওই বৈঠকগুলিকে সিপিএমের পক্ষে সনত্ প্রামাণিক ও কংগ্রেসের নলহাটি শহর কমিটির সভাপতি প্রকাশ প্রসাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন৷

দু’পক্ষই প্রথম থেকে জোটের পক্ষে সহমত হলেও আসন বন্টন নিয়ে কিছু বিরোধ হয়েছে৷ ওই বৈঠকগুলিতে সিপিএমের সঙ্গে তাদের শরিক দল ফরওয়ার্ড ব্লকও ছিল৷ গত পুরভোটে কংগ্রেস নলহাটিতে ৩টি আসনে জিতেছিল৷ আর সিপিএম ও ফরওয়ার্ড ব্লকের দখলে গিয়েছিল ১টি করে আসন৷ এ বার কংগ্রেস ৮টি আসনে প্রার্থী দিতে চায়৷ আবার সিপিএম -ফরওয়ার্ড ব্লকও ৮টিতে লড়তে আগ্রহী৷ ফলে ১টি আসন নিয়ে বিরোধ আছে৷ কিন্ত্ত সেই সমস্যা মেটাতে দু’পক্ষই মরিয়া৷ দুই দলের সূত্রেই খবর মিলেছে , শুক্রবার ফের বৈঠক করে আসন ভাগাভাগি চূড়ান্ত করে রবিবার পৃথক পৃথক ভাবে কংগ্রেস ও সিপিএম প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করবে৷

কেন্দ্রীয় কমিটির নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে কংগ্রেসের সঙ্গে দফায় দফায় সিপিএমের বীরভূম জেলা নেতৃত্ব বৈঠক করে চলেছেন বলে দুই দলের সূত্রেই খবর মিলেছে৷

জলের জোগানে অন্তর্ঘাত, সঙ্কটে প্রশাসন

$
0
0

সঞ্জয় চক্রবর্তী ■ দার্জিলিং
সরকারি সম্পত্তি জ্বলছে৷ দাঁড়িয়ে দেখছে প্রশাসন৷ হামলা-ভাঙচুরের সামনে পাহাড়ে কার্যত হাত গুটিয়ে পুলিশ৷ তাতেও রেহাই নেই৷ প্রশাসনিক কর্তাদের জীবন অতিষ্ঠ হওয়ার জোগার পাহাড়ে৷ সরকারি দন্তরে আসা -যাওয়ার পথে কর্মী-আধিকারিকদের গালাগাল-টিপ্পনি তো শুনতেই হচ্ছে৷ তার উপর নানা ভাবে জলের সমস্যা তৈরি করা হচ্ছে সরকারি দপ্তরে৷ বাদ দেওয়া হচ্ছে না খোদ জেলাশাসকের দপ্তরকেও৷ দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক জয়সী দাশগুপ্ত নিজেই জানালেন , গত এক মাসে অন্তত তিন বার তাঁর দন্তরে সংযোগকারী জলের লাইন কেটে দেওয়া হয়েছে৷ জিটিএ-র দপ্তর বন্ধ করে ভানু ভবনে সিআরপিএফ ক্যাম্প তৈরি করা হয়েছিল ৮ জুন পুলিশ -মোর্চা খণ্ডযুদ্ধের পর৷ সেই ক্যাম্পেও প্রায়ই জল সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ৷

ট্যাঙ্কারে করে ভানু ভবনে পানীয় জল সরবরাহ করা হয়৷ প্রায়ই সেই ট্যাঙ্কার আসছে না৷ ফলে জলসঙ্কটে ভুগছেন সিআরপিএফ জওয়ানরা৷ তখন প্রশাসনের হস্তক্ষেপ করে চালকদের কাউকে ধরে এনে জলের জোগানের ব্যবস্থা হচ্ছে৷ জল সরবরাহের দায়িত্ব পুরসভার৷ আর পুরসভার ক্ষমতায় মোর্চা৷ ফলে জল সরবরাহে বিঘ্ন ঘটানোর পিছনে মোর্চার হাত আছে বলেই অভিযোগ উঠছে৷ দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক জয়সী দাশগুন্ত অবশ্য বলেন , ‘এসব করে সরকারি কর্মীদের মনোবল ভাঙা যাবে না৷ তবে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নামে পাহাড়ে যথেচ্ছাচার হচ্ছে৷ ’

মোর্চা অবশ্য জলের ট্যাঙ্কার আটকে দেওয়া কিংবা জলের লাইন কেটে দেওয়ার ঘটনা অস্বীকার করছে৷ দলের সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেন , ‘এমন কোনও ঘটনার কথা শুনিনি৷ এমন কিছু হয়েছে কিনা , সন্দেহ আছে তা নিয়ে৷ ’বর্ষার সময়েও পাহাড়ের পানীয় জলের সঙ্কট থাকে৷ পুর এলাকাগুলিতে পানীয় জল সরবরাহ ব্যবস্থাই আধুনিকিকরণের অভাবে কার্যত পঙ্গু৷ শহরে ট্যাঙ্কারে করে জল সরবরাহ করা হয়৷ ট্যাঙ্কারের জল লিটার পিছু দেড় টাকা দরে কিনে নিতে হয়৷ বন্ধের জলের সেই দর বেড়েছে৷ প্রশাসনিক কর্তারা এই জল সঙ্কটের কারণ খতিয়ে দেখতে গিয়ে পাহাড়ের সব পুর এলাকাতেই জল -মাফিয়াদের সন্ধান পেয়েছেন৷ অধিকাংশ জলের ট্যাঙ্কার ওই জল -মাফিয়াদের হাতেই৷ সেই মাফিয়াদের একটা বড় অংশ আবার মোর্চারই ছোট বা বড় মাপের নেতা বলে অভিযোগ৷ দার্জিলিংয়ে ট্যাঙ্কারগুলির মালিক মোর্চার এক শীর্ষ নেতা বলে অভিযোগ৷ প্রশাসনিক কর্তারা বলছেন , তাঁদের জব্দ করতে মোর্চা এই জল -মাফিয়াদের ব্যবহার করছে৷

দার্জিলিং জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে , রাজ্য সরকারের নির্দেশে পাহাড়ের জল -মাফিয়াদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে৷ আধিকারিক-কর্মীদের উদ্বেগের আর এক কারণ, সরকারি দপ্তরের বাইরে সব সময় কিছু লোকের ভিড় থেকে তাঁদের লক্ষ করে উড়ে আসা অশ্রাব্য গালাগাল৷ প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে , উদ্দেশ্য হল , এভাবে হেনস্থা করে সরকারি কর্মীদের দন্তরে আসা বন্ধ করতে বাধ্য করা৷ সরকারি কর্মীরা তার পরেও ডিউটি করায় প্রত্যন্ত এলাকায় সরকারি দন্তরগুলি জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে৷ জল -মাফিয়াদের তালিকা তৈরির পাশাপাশি প্রশাসন ইতিমধ্যে মৃত ৭ জন মোর্চা কর্মীর মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখছে৷ মোর্চার অভিযোগ, পুলিশের গুলিতে ওই সাত জনের মৃত্যু হয়েছে৷ প্রশাসনের প্রাথমিক অনুসন্ধান রিপোর্ট কিন্ত্ত ভিন্ন কথা বলছে৷

গত ৮ জুলাই সোনাদায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত তাসি ভুটিয়ার দেহ থেকে পাওয়া বুলেট পরীক্ষা করার পর প্রশাসনের বক্তব্য , ওই ধরনের বুলেট পুলিশ ব্যবহারই করে না৷ বুধবার দার্জিলিংয়ে মোর্চা যে অশোক তামাংয়ের দেহ নিয়ে মিছিল করে , তারও পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে বলে মোর্চার দাবি৷ কিন্ত্ত পুলিশি তদন্তে সামনে এসেছে যে ভোজালির আঘাতে অশোকের লিভার বেরিয়ে গিয়েছিল৷ গুরুতর জখম ওই যুবককে প্রশাসন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে রেফার করে৷ প্রশাসনের অভিযোগ , শিলিগুড়ি যাওয়ার পথে অ্যাম্বুল্যান্সটি মাঝপথে ঘুরিয়ে সিকিমে মণিপাল মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়৷ সেখানে চিকিত্সকেরা অশোক তামাংয়ের দেহে বুলেট ক্ষত দেখতে পান৷ জেলাশাসক বলেন , ‘অশোক তামাংয়ের দেহ কেনও মাঝপথে সিকিমে নিয়ে যাওয়া হল , তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷ ’


ধর্ষণ ঘিরে অগ্নিকাণ্ড রায়গঞ্জে

$
0
0

এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: চার আদিবাসী মহিলার শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণের ঘটনার অভিযোগকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রে পরিণত হল রায়গঞ্জ। রায়গঞ্জের পৌর বাসস্ট্যান্ড-সহ শহর জুড়ে প্রচুর দোকান, হোটেল ও গাড়িতে ভাঙচুর চালান স্থানীয় আদিবাসীরা। একাধিক ফলের দোকান ভস্মীভূত হয়। এর আগে বেশ কিছু ক্ষণ শিলিগুড়ি মোড়ে জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা। সাঁওতালদের এই তাণ্ডবে আতঙ্কে গোটা শহর।

গত রবিবার বিজেপির ডাকা জেলা বন্‌ধের দিন রায়গঞ্জ পৌর বাসস্ট্যান্ডে আদিবাসী দুই কিশোরী ও দুই যুবতীকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ৬-৭ জন যুবক শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ দুই যুবতীকে উদ্ধারের পাশাপাশি হাতেনাতে তিন দুষ্কৃতীকে আগ্নেয়াস্ত্র ও ৭ রাউন্ড গুলি-সহ গ্রেপ্তার করে রায়গঞ্জ থানার পুলিশ। কিন্তু দুই কিশোরীর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি গত দু’দিন ধরে। ওই যুবতীরা পুলিশকে দুই কিশোরীর নিখোঁজের কথা জানালেও পুলিশ তাতে আমল দেয়নি।

পরে কোনোক্রমে ওই দুই কিশোরী দুষ্কৃতীদের হাত থেকে নিজেদের মুক্ত করে তাদের বাড়িতে গিয়ে ঘটনার কথা জানালে পুলিশের কাছে পরে অপহরণ ও ধর্ষণের লিখিত অভিযোগ জানানো হয়। কিন্তু সেই দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ কোনও উদ্যোগ নেয়নি বলে অভিযোগ। এর পরেই ক্ষেপে ওঠে আদিবাসী সমাজ। সমস্ত আদিবাসী সংগঠনগুলি একত্রিত হয়ে শুক্রবার রায়গঞ্জে গিয়ে এই আন্দোলন ও ভাঙচুর শুরু করে।

তথ্য এবং ছবি: রণবীর দেব অধিকারী


বাড়ি গিয়ে কাকলিকে জেরা করল সিবিআই

$
0
0

এই সময়: নারদ তদন্তে একই দিনে দু’দুটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআইয়ের৷ নোটিস পাঠানোর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদারের বাড়ি গিয়ে জেরা করলেন সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা৷ পাশাপাশি , কলকাতার মহমেডান স্পোর্টিং ক্লাবের কর্তাদের নোটিস পাঠিয়ে ডেকে পাঠালেন তাঁরা৷ বারাসতের সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার অবশ্য জেরার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন৷ বাড়ির বাইরে বেরিয়ে এসে তিনি বলেন , ‘আমার বাড়িতে কেউ আসেনি৷ আমি দলের ছাত্র সংগঠনের ফুটবল ম্যাচ নিয়ে ব্যস্ত রয়েছি৷ আমাকে জেরা করা হলে আমি বাইরে এসে এ ভাবে কথা বলতে পারতাম ?’

রাতে সিবিআইয়ের এক মুখপাত্র বলেন , ‘নারদ সংক্রান্ত মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদারকে আজ জেরা করা হয়েছে৷ তিনি এক জন মহিলা৷ ফলে সব দিক বিবেচনা করেই আমাদের দল মধ্যমগ্রামের বাড়িতে গিয়ে তাঁকে জেরা করেছে৷ ’অতীতে সারদা -কাণ্ডে জড়িয়ে গিয়েছিল কলকাতা ফুটবলের দুই প্রধান মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গল৷ এ বার মহমেডানের নামও জড়াল নারদ -কাণ্ডে৷ এই ক্লাব মূলত চালান তৃণমূল সাংসদ সুলতান আহমেদ ও তাঁর ভাই ইকবাল আহমেদ৷ খানাকুলের বিধায়ক ইকবাল আহমেদের বয়ানের উপর ভিত্তি করেই মহমেডানকে নোটিস পাঠাল সিবিআই৷ এর আগে জেরার জবাবে ইকবাল জানিয়েছিলেন , যে -টাকা তিনি ম্যাথুর কাছ থেকে নিয়েছিলেন তার মধ্যে প্রায় দু’লক্ষ টাকা ক্লাবকে দেওয়া হয়েছিল৷ সেই বক্তব্যের সত্যতা যাচাই করতে আগামী সন্তাহের মধ্যে ক্লাবের ২০১৪ -২০১৫ সালের হিসেব -নিকেশ সহ কাগজপত্র জমা দিতে ক্লাবকে নোটিস পাঠিয়েছে সিবিআই৷ ক্লাব সহ -সচিব রাজু আহমেদ বললেন , ‘আমরা সিবিআইয়ের চিঠি পাইনি৷ পেলে হিসেব দিয়ে দেব৷ ’

কাকলিকে সোমবার নিজাম প্যালেসে হাজির হওয়ার জন্য বলা হয়েছিল৷ সূত্রের খবর , এ দিন সকালে তৃণমূলের সাংসদের সঙ্গে সিবিআইয়ের কর্তাদের ফোনে কথা হলে তিনি জানান , কিছু ব্যক্তিগত অসুবিধার জন্য সিবিআই দন্তরে সশরীরে হাজির হতে পারছেন না৷ ফলে তদন্তকারীরা চাইলে মধ্যমগ্রামে তাঁর বাড়িতে আসতে পারেন৷ এর পর দুপুর বারোটা নাগাদ মিনিস্ট্রি অফ রেলওয়েজের স্টিকার লাগানো একটি গাড়িতে সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসার রঞ্জিত কুমারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল মধ্যমগ্রামের দিগবেড়িয়াতে সাংসদের বাড়িতে হাজির হন৷ কাকলি তখন বাড়িতে ছিলেন না৷ তিনি রবীন্দ্রভবনে একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন৷ সিবিআই তদন্তকারীদের আসার খবর পেয়ে বাড়িতে আসেন তিনি৷ তদন্তকারী দলে তিন জনের মধ্যে এক মহিলা সদস্যও ছিলেন৷ তাঁরা সঙ্গে করে একটি ল্যাপটপ নিয়ে এসেছিলেন৷ বাড়ির ভিতরেই সাংসদের সঙ্গে প্রায় চার ঘণ্টা কথা হয় তাঁদের৷

সিবিআই সূত্রের খবর , ম্যাথুর থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়টি কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন বারাসতের সাংসদ৷ সেই টাকা নির্বাচনের কাজে ব্যবহার করেছেন বলেও জানিয়েছেন তদন্তকারীদের৷ তাঁর বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে বলেও কেন্দ্রীয় সংস্থা সূত্রে দাবি করা হয়েছে৷ তবে বিকেলে ফের সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে কাকলি দাবি করেন , ‘সিবিআই রেলের স্টিকার লাগানো গাড়ি করে আসবে এটা অত্যন্ত হাস্যকর ! আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকার সময় রেলের বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে রেলের কর্তারা সাংসদের সঙ্গে কথা বলতে আসতেন৷ এ দিনও তেমনই এসেছিলেন৷ ’ যদিও রাতে সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে দেওয়া হয় , নারদ -কাণ্ডের তদন্ত করতেই তদন্তকারীরা তৃণমূল সাংসদের বাড়ি গিয়েছিলেন৷

রায়গঞ্জে তির-ধনুক হাতে নিয়ে রুদ্রমূর্তি আদিবাসীদের

$
0
0

রণবীর দেব অধিকারী ■ রায়গঞ্জ
কারও হাতে তির -ধনুক৷ কারও হাতে টাঙ্গি-কুড়ুল৷ আদিবাসীদের বিক্ষোভে দিনভর থরহরি রায়গঞ্জ৷ চার আদিবাসী মহিলাকে ধর্ষণের ঘটনায় পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়নি এই অভিযোগে এ দিন উত্তর দিনাজপুরের জেলা শহরে চড়াও হন আদিবাসীরা৷ প্রথমে শান্তিপূর্ণ মিছিল শুরু করলেও কিছুক্ষণের মধ্যে শুরু হয় ভাঙচুর , অগ্নিসংযোগ -হামলা৷ ভেঙে দেওয়া হয় পুরসভার বাসস্ট্যান্ডের অফিস , তৃণমূল শ্রমিক ইউনিয়নের অফিস৷ ধর্ষণে জড়িত দুষ্কৃতীরা তৃণমূল শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য বলে অভিযোগ থাকায় সেখানেই রোষ আছড়ে পড়ে৷ পুলিশ মোতায়েন থাকলেও তারা ছিল নীরব দর্শক৷ আগুন নেভাতে দমকল কর্মীরা এলেও তাঁদের ধারে-কাছে ঘেঁষতে দেয়নি বিক্ষোভকারীরা৷ পুলিশও সাহায্য করেনি৷ প্রতিবাদে শনিবার ১২ ঘণ্টার ব্যবসা ধর্মঘট ডেকেছেন ব্যবসায়ীরা৷

এত বড় ঘটনার পরেও মুখে কুলপ এঁটেছিলেন পুলিশকর্তারা৷ উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার অমিতকুমার ভরত রাঠৌরের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি৷ গোলমালের সময় ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে থাকলেও কোনও মন্তব্য করতে চাননি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নিকিতা ফনিং৷ ভাঙচুরের পর দীর্ঘক্ষণ ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে চলে আদিবাসীদের অবরোধ৷ পুলিশ তাঁদের সরানোর চেষ্টাই করেনি৷ সন্ধ্যায় আদিবাসীরা অবরোধ তুলে নেওয়ার পর পরিস্থিতি আয়ত্তে আসে৷ পরে আদিবাসী মহাসভার উত্তর দিনাজপুর জেলা সম্পাদক রবীন কিস্কু বলেন , ‘প্রশাসন অভিযুক্তদের গ্রেন্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার আশ্বাস দেওয়ায় অবরোধ তুলে নিলাম৷ ’ দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া না -হলে ফের আন্দোলনের হুমকি দিয়ে ফিরে যান আদিবাসীরা৷

এই ঘটনায় তৃণমূলকে দায়ী করেছে বিজেপি৷ দলের রাজ্য কমিটির পক্ষে প্রচারিত বিবৃতিতে বলা হয় , ‘তিন জন আদিবাসী মহিলাকে তৃণমূলের শ্রমিকরাই ধর্ষণ করেছে৷ পুলিশ তাদের গ্রেন্তার করতে ব্যর্থ হয়েছে৷ আদিবাসীরা তাই আজ শান্তিপুর্ণ বিক্ষোভ দেখিয়েছে৷ পুলিশ সেই প্রতিবাদ আটকানোর চেষ্টা করেছে৷ বিজেপি এই ঘটনার নিন্দা করছে৷ ’ যদিও তৃণমূলের উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি অমল আচার্য বলেন , ‘ধর্ষণে অভিযুক্তদের সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই৷ ’ ঘটনাটি গত রবিবারের৷ চোপড়ায় দলীয় নেতা খুনের প্রতিবাদে সেদিন বিজেপির ডাকে উত্তর দিনাজপুর বন্ধ ছিল৷ পুরসভার বাসস্ট্যান্ডে কর্মীদের বিশ্রামাগারে টেনে নিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে জনা ছয়েক দুষ্কৃতী চার জন আদিবাসী মহিলাকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ৷

পুলিশ তড়িঘড়ি সেখানে গিয়ে দুই আদিবাসী তরুণীকে উদ্ধার করে৷ তিন দুষ্কৃতীকেও আগ্নেয়াস্ত্র -সহ গ্রেপ্তার করেছিল৷ কিন্ত্ত আরও দুই আদিবাসী কিশোরীর তখন হদিস করতে পারেনি পুলিশ৷ উদ্ধার হওয়া তরুণীরা বারবার বলা সত্ত্বেও কিশোরী দু’জনকে উদ্ধার করতে পুলিশ উদ্যোগী হয়নি বলে আদিবাসীদের অভিযোগ৷ তিন দিন পর ওই কিশোরীরা বাড়ি ফিরে জানায় , আরও দুই দুষ্কৃতী তাদের একটি হোটেলে টেনে নিয়ে গিয়ে আটকে রেখে ধর্ষণ করে৷ সেই খবর চাউর হতেই উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর ও মালদহের আদিবাসী মহল্লাগুলিতে উত্তেজনা ছড়ায়৷ এর পরেই শুক্রবার রায়গঞ্জে চড়াও হন তাঁরা৷ বাসস্ট্যান্ডের পর একাধিক দোকান ও হোটেলেও আগুন লাগানো হয়৷ বেসরকারি একটি ট্রান্সপোর্ট কোম্পানির গুদাম ছাই হয়ে যায়৷ ভস্মীভূত হয়েছে বাসস্ট্যান্ড চত্বরে আইএনটিটিইউসি -র জেলা কার্যালয়৷ পুলিশের সামনে ভাঙা হয়েছে ট্র্যাফিক কিয়স্ক৷ বহু ছোট গাড়িতেও ভাঙচুর করেন আদিবাসীরা৷ পোড়ানো হয় বহু সাইকেল ও মোটরবাইক৷

২ কোর্টে স্বস্তি রাজ্যের, আরও বাহিনী পাহাড়ে

$
0
0

এই সময়, নয়াদিল্লি ও কলকাতা: একই দিনে হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে বড়সড় জয় পেল রাজ্য সরকার৷ পাহাড়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজ্যের দাবি মেনে কেন্দ্রকে চার কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে দুই আদালতই৷ যদিও দিনের শেষে বাহিনীর পরিমাণ নিয়ে কিছুটা বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে৷ দু’টি আলাদা মামলায় দুই আদালতই চার কোম্পানি বাহিনী পাঠানোর নির্দেশ দেওয়ায় রাজ্য মোট কত বাহিনী পাবে তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে রাজ্য স্বরাষ্ট্র দপ্তরে৷

নবান্নে দপ্তরের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘আদালতের দু’টি রায়ের ব্যাপারেই শুনেছি৷ কিন্ত্ত বাহিনী আদতে চার কোম্পানি না আট কোম্পানি সেটা রায়ের কপি দেখেই বলতে পারব৷ ’ এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন , ‘আমি এই ব্যাপারে কিছু বলব না৷ সব ব্যাপারেই কি আমায় বলতে হবে ?’ গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনের জেরে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে পড়ায় রাজ্যের অর্থনৈতিক সমস্যার কথা বলে সুপ্রিম কোর্টে রিট পিটিশন করেছিল সিকিম সরকার৷

সেই মামলায় কেন্দ্রীয় সরকারের আবেদন খারিজ করে দার্জিলিংয়ের অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাজ্যে আরও চার কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠাতে কেন্দ্রকে নির্দেশ দেয় বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ৷ এই চার কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীকে মোতায়েন করতে হবে পাহাড়েই , দ্রুত স্বাভাবিক করে তুলতে হবে সিকিমের সঙ্গে সংযোগ রক্ষাকারী ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের অবস্থা৷ একই সঙ্গে পাহাড়ে শান্তি ফেরানো নিয়ে সর্বোচ্চ আদালতের আবেদন , ‘শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য এগিয়ে আসতে হবে রাজ্যবাসীকেই৷ উন্নয়নমুখী সমাজের স্বার্থেই এই কাজ করা করা উচিত তাঁদের৷ ’ এই মামলায় শীর্ষ আদালতে কেন্দ্রের হয়ে সওয়াল করেন অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল৷ রাজ্যের আইনজীবী ছিলেন কপিল সিবাল৷ সিবাল আবেদন করেন , কেন্দ্র যেন রাজ্যের মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকা থেকে বাহিনী প্রত্যাহার করে দার্জিলিংয়ে না-পাঠায়৷ ’

বিচারপতি দীপক মিশ্র বলেন , ‘এটা কেন্দ্রের বিচার্য বিষয়৷ ’ একই দিনে কলকাতা হাইকোর্টও আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আরও চার কোম্পানি সিআরপিএফকে পাহাড়ে পাঠাতে কেন্দ্রকে নির্দেশ দিয়েছে৷ পাহাড়ের দুই জেলায় প্রয়োজন মাফিক নিজস্ব বাহিনী পাঠাতে হবে রাজ্যকেও৷ তবে রাজ্য যে সাত কোম্পানি বাহিনী বদলের দাবি আদায়ে লড়ছিল , কেন্দ্র সেই দাবি শেষ পর্যন্ত মানতে রাজি হয়নি৷ রাজ্যের পাশে দাঁড়িয়ে এ দিন কেন্দ্রকে চার কোম্পানি সিআরপিএফ দেওয়ার নির্দেশ দিলেও দুই সরকারের প্রতি এ দিনও খড্গ়হস্ত ছিল হাইকোর্ট৷ ভারপ্রান্ত প্রধান বিচারপতি নিশীথা মাত্রে ও বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ মনে করছে , পাহাড়ের বর্তমান পরিস্থিতি গোটাটাই রাজনৈতিক৷ অথচ মূল রাজনৈতিক দলগুলির তাতে হেলদোল নেই৷ দোকান , বাজার , রেশন সব বন্ধ৷ এর পরেই হাইকোর্টের হুঁশিয়ারি , কেন্দ্র ও রাজ্য যদি আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে না-পারে, তা হলে হাইকোর্টই হস্তক্ষেপ করবে৷ মদন তামাং খুনের মামলায় আদালত অবমাননার বিষয়টি নিয়ে সিবিআইয়ের বক্তব্য জানতে চায় আদালত৷ তবে এ দিন কেন্দ্র সে ব্যাপারে কিছু না -জানানোয় মঙ্গলবারের মধ্যে হলফনামা দিয়ে সেই তথ্য জানাতে নির্দেশ দেয় আদালত৷ বুধবার ফের শুনানি৷

নিষ্ক্রিয়দের ছেঁটে রদবদলের পথে রাজ্য বিজেপিও

$
0
0

এই সময় : ব্যাপক রদবদল হতে চলেছে রাজ্য বিজেপিতে৷ চলতি মাসেই এই রদবদল হওয়ার কথা৷ যুব নেতাদের গুরুত্বপূর্ণ পদে এনে ‘নিষ্ক্রিয়দের ’ ছেঁটে ফেলতে চাইছে রাজ্য বিজেপি থিঙ্ক ট্যাঙ্ক৷ নতুন কাকে পার্টির সাধারণ সম্পাদক করা হবে , কাকেই বা সহ -সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে , অথবা নতুন কাকে দলের রাজ্য সম্পাদক করা হবে , তা নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে ৬ মুরলীধর সেন লেনে বিজেপির রাজ্য দপ্তরে৷ রদবদল যে করতেই হবে , তা দিল্লি থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষকে৷

জুলাইয়ের শেষে বসছে বিজেপির রাজ্য কার্যকারিণী বৈঠক৷ সেখানে রদবদলের কথা ঘোষণা করা হতে পারে বলে বিজেপি সূত্রে খবর৷ সম্প্রতি দিলীপদের সঙ্গে দিল্লিতে বৈঠকে বসেছিলেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ৷ সেখানে তিনি রদবদলের বিষয়টিতে সিলমোহর দেন৷ বিজেপির অন্দরের খবর , রাজ্য বিজেপির দুই অন্যতম সম্পাদক সায়ন্তন বসু এবং রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘প্রোমোশন ’ দিয়ে সাধারণ সম্পাদক করা হতে পারে৷ সাধারণ সম্পাদক হওয়ার দৌড়ে আছেন লকেট চট্টোপাধ্যায় এবং কর্নেল দীন্তাংশু চৌধুরীও৷ পার্টির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী , রাজ্য বিজেপিতে চার জন সাধারণ সম্পাদক থাকতে পারেন৷ এই মুহূর্তে রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদকরা হলেন , প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় , দেবশ্রী চৌধুরী , সুভাষ সরকার এবং বিশ্বপ্রিয় রায়চৌধুরী৷ এঁদের মধ্যে কাকে সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সরানো হবে , তা নিয়ে এখনও দড়ি টানাটানি চলছে ৬ মুরলীধর সেন লেনের সঙ্গে কলকাতায় আরএসএসের হেডকোয়ার্টার কেশব ভবনের৷ রাহুল সিনহার পরবর্তী জমানায় রাজ্য সভাপতি হওয়ার দৌড়ে ছিলেন সুভাষ সরকার৷ তিনি আরএসএসের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ৷

কিন্ত্ত শেষ মুহূর্তে আরএসএসের ‘ঘরের ছেলে ’ দিলীপ ঘোষকেই বসানো হয় রাজ্য সভাপতির গদিতে৷ সান্ত্বনা পুরস্কার হিসেবে সুভাষকে দেওয়া হয় সাধারণ সম্পাদকের চেয়ার৷ গত কয়েক মাসে সুভাষের সঙ্গে আরএসএসের দূরত্ব কিছুটা বেড়েছে৷ প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপির পুরোনো নেতা , তপন সিকদারের ঘনিষ্ঠ ছিলেন৷ পরবর্তী সময় রাহুল শিবিরে ভিড়ে রাজ্য বিজেপির সহ -সভাপতি হন তিনি৷ জমানা বদলের সঙ্গে নিজেকেও বদলে নেন প্রতাপ৷ দিলীপ ঘোষের জমানায় পদোন্নতি পেয়ে তিনি সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন৷ কিন্ত্ত আরএসএসের ‘বিশ্বস্ত’ বলে সুখ্যাতি নেই তাঁর৷ অন্য দিকে বিশ্বপ্রিয় রায়চৌধুরী রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক হলেও , উত্তরবঙ্গ নিয়েই ব্যস্ত থাকেন তিনি৷

রাজ্য বিজেপির মাঝারি স্তরের নেতারা জানেন , পার্টির সাধারণ সম্পাদক হলেও , বিশ্বপ্রিয় দলের ‘থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ’ নন৷ ফলে এই চারজনের মধ্যে কার কপালে খাঁড়া ঝুলছে তা একমাত্র কেশব ভবনই জানে৷ পাশাপাশি , বিজেপির বেশ কয়েক জন রাজ্য সহ -সভাপতি নিষ্ক্রিয় হয়ে আছেন বলে অভিযোগ৷ তাঁদের সরিয়ে ওই পদে বিভিন্ন জেলার কয়েকজন তরুণ নেতাকে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত হয়েছে৷ বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন , ‘রদবদল হলে সবাই দেখতে পাবে৷ আগ বাড়িয়ে আমার পক্ষে কিছু বলা সম্ভব নয়৷ ’

Viewing all 41318 articles
Browse latest View live